রেলের ভাড়া বাড়তে চলেছে। এবার আর শুধু এক্সপ্রেস নয়, লোকাল ট্রেনের ভাড়াও বাড়তে পারে। রেল বোর্ড সূত্রে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। বাড়তে পারে মান্থলি, কোয়ার্টারলির দামও।
রেল বোর্ড সূত্রে যা খবর তাতে, আয় বাড়াতে যাত্রীভাড়া বৃদ্ধির পথেই হাঁটতে চলেছে রেলমন্ত্রক। কিলোমিটার পিছু ৫ পয়সা থেকে ৪০ পয়সা পর্যন্ত বাড়তে পারে ভাড়া। দূরপাল্লার মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের পাশাপাশি শহরতলির লোকাল ট্রেনও এই ভাড়া বৃদ্ধির আওতায় পড়তে চলেছে বলে খবর। কিছুদিন ধরেই ভাড়া বাড়বে বলে জল্পনা ছিল। এখন সেটাই স্পষ্ট হল।
ভাড়া বাড়ানোর কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও পর্যন্ত না হলেও রেলের এই ভাড়া বৃদ্ধির জল্পনা উস্কে দিয়েছেন খোদ রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয়কুমার যাদব। তিনি বলেছেন, ‘রেলের যাত্রীভাড়া এবং পণ্য মাশুল নিয়ে যুক্তিপূর্ণ বিচার করছে রেলমন্ত্রক। র্যাশনালাইজিংয়ের প্রক্রিয়া চলছে। তবে চূড়ান্ত কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি। শীঘ্রই এই সংক্রান্ত ঘোষণা হবে।’
গত নভেম্বর মাসেই এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন চলছিল বলে রেলের যাত্রীভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত ঘোষণা করতে পারেনি রেলমন্ত্রক। এবার খুব শীঘ্রই যাত্রীভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা হতে পারে। এমনকী বাজেটের আগে এই আর্থিক বছর থেকেই নতুন ভাড়া কার্যকর হতে পারে।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে রেলের অনেক সংস্কার হয়েছে। রেল বাজেট মিশে গেছে সাধারণ বাজেটের মধ্যে। সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় রেল বোর্ড ছোট করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। তবে মোদী জমানায় রেল ভাড়া একবারও বাড়েনি। এবার লোকসানের বোঝা কমাতে সেই পথেই হাঁটতে চলেছে সরকার। প্রতি কিলোমিটারে ৫ পয়সা থেকে ৪০ পয়সা পর্যন্ত ট্রেন অনুসারে ভাড়া বাড়তে পারে।
ফেব্রুয়ারি মাসেই সাধারণ বাজেট পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এটাই হবে তাঁর প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ। তবে ততদিন অপেক্ষা না করে বাজেটের আগেই ভাড়া বাড়ানোর কথা ঘোষণা হতে পারে বলে রেলমন্ত্রক সূত্রে খবর।
ভারতীয় রেল যে লোকসানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা সম্প্রতি ক্যাগ রিপোর্টেই জানা গিয়েছে। ক্যাগ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ সালে রেলের অপারেটিং রেশিও ৯৮.৪৪ শতাংশ। এমনটা গত দশ বছরে হয়নি। এর মানে হচ্ছে এই সময়ে ১০০ টাকা আয় করতেই রেলকে খরচ করতে হচ্ছে ৯৮.৪৪ টাকা। রেলের নগদ উদ্বৃত্তের পরিমাণও যথেষ্ট কম বলে জানিয়েছে ওই রিপোর্ট। কমেছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই রেলকে যাত্রীভাড়া বৃদ্ধির পথেই হাঁটতে হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।