ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। তবে মোদী সরকার যেন ভারতে এক প্রকার স্বৈরতন্ত্র প্রতিস্থাপনের চেষ্টায় রত৷ দেশ জুড়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে সিএএ-র বিরোধীতায়। দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ, দিন দিন বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে আর সেই দেশের কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব আইন পাশ করিয়ে মানুষের নাগরিকত্বে প্রশ্ন চিহ্ন দিচ্ছে। স্বভাবতই মানুষ এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়বে! ঠিক তখনই আবারও আগুনে ঘি ঢালার কাজ করল কেন্দ্রীয় সরকার। দেশদ্রোহী মানুষদের বিক্ষোভ টিভিতে দেখানো যাবে না, সমাজে হিংসা তৈরি করতে পারে, এমন দৃশ্য টিভিতে সম্প্রচার করতে ফের বারণ করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞায় জানানো হয়, ‘দেশদ্রোহী মানুষদের বিক্ষোভ দেখানো যাবে না। হিংসার দৃশ্য দেশের সম্প্রীতি নষ্ট হবে। আইন–ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।’
গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক একটি নির্দেশিকা জারি করে সমস্ত বেসরকারি টিভি চ্যানেল, ডিটিএইচ অপারেটর এবং কেবল অপারেটরগুলির উদ্দেশ্যে। তাতে পরিস্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, এমন কিছু টিভিতে দেখানো যাবে না যাতে সমাজে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। দেশদ্রোহী মানুষের বিক্ষোভ দেখানো যাবে না বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু দেশদ্রোহী কাদের বলা হচ্ছে? মোদী সরকারের সঙ্গে সহমত না হলেই সে দেশদ্রোহী! হাজার হাজার মানুষ এই এনআরসি ক্যাবের বিরোধিতায় পথে নামছেন তাহলে সকলেই দেশদ্রোহী সে প্রশ্ন উঠছেই।
এই নিয়ে দু’বার এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেন্দ্র। গত ১১ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর গোটা উত্তর–পূর্বের রাজ্যগুলিতে বিক্ষোভ তুমুল আকার নেয়। সেই সময়েও এই নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। এরপর দিল্লী, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রে হয় বিশাল প্রতিবাদ। প্রতিবাদ আটকাতে জামিয়া মিলিয়ায় পড়ুয়াদের ওপর পুলিশ তাণ্ডব চালায়। আলিগড়ে চলে হামলা। শুধু তাই নয় ম্যাঙ্গালোরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় দু’জন বিক্ষোভকারীর।