এনআরসি-সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে গোটা দেশজুড়ে। এবার সেই তার আঁচ ছড়াল প্রবাসেও। গত বুধবার রাতে লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে এই ইস্যুতে বিক্ষোভে শামিল হন কয়েকশো মানুষ। যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন পড়ুয়া এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত। বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিল সাউথ এশিয়া সলিডারিটি গ্রুপ এবং এসওএএস ইন্ডিয়া সোসাইটি। এছাড়াও এই কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছিল আট দশকের পুরনো সংগঠন ইন্ডিয়ান ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন গ্রেট ব্রিটেন-ও।
‘পুলিসি বর্বরতা বন্ধ কর’, ‘সিএএ খারিজ কর’, ‘এনআরসি বয়কট কর’, ‘ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য ধর্মের পরীক্ষা দেব না’ লেখা প্ল্যাকার্ডের পাশাপাশি ‘আজাদি’র স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছিল গোটা চত্বর। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্দেশে ‘সাইমন মোদি গো ব্যাক’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতেও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়া।
তাঁদেরই একজন বলেন, ‘পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারত— এই তিন দেশেরই পড়ুয়ারা এখানকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। তাঁরা কিন্তু সবাই মুসলিম নন। সব ধর্মের পড়ুয়ারাই এখানে রয়েছেন। আমরা পুরোপুরি এনআরসি এবং সিএএ’র বিরুদ্ধে।’ জামিয়া মিলিয়া এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর ‘পুলিসি নির্যাতন’ ইস্যুতে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘আমরা ঘৃণার সংস্কৃতির ঘোরতর বিপক্ষে।’
আবার ইন্ডিয়ান ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন গ্রেট ব্রিটেন-এর প্রেসিডেন্ট দয়াল বাগরির মতে, তড়িঘড়ি পাশ হওয়া এই বিল বিশেষ করে মুসলিম শরণার্থীদের অধিকারকে খর্ব করেছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সংবিধানের মূল ভিত্তিকেও আঘাত করেছে এই বিল।
দয়াল বাগরি বলেন, ‘আমরা দেশভক্ত ভারতবাসী হিসেবে আজ একই সঙ্গে লজ্জিত এবং ক্ষুব্ধ। কারণ, আমাদের যে মহান দেশটি বৈচিত্র্য এবং সহিষ্ণুতার প্রতীক ছিল, সেখানে আজ এইধরনের কাজকর্ম চলছে। সারা বিশ্ব থেকে আগত শরণার্থীদের বরবারই স্বাগত জানিয়ে ঠাঁই দিয়েছে ভারত। এক্ষেত্রে কখনওই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে বাছ-বিচার করা হয়নি।’
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপর পুলিসের অত্যাচারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন হার্ভার্ড, ইয়েল, এমআইটি এবং অক্সফোর্ডের মতো নামজাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। গত মঙ্গলবারই অক্সফোর্ডের র্যা ডক্লিফ স্কোয়ারে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি পড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন পড়ুয়ারা।