নাগরিকত্ব আইনের সৌরভ তনয়া সানা গাঙ্গুলির ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ঘিরে উত্তাল হয়েছিল নেট দুনিয়া। তবে মেয়ের হয়ে সৌরভ যেভাবে বুধবার রাত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় খড়গহস্ত হয়েছেন, তা দেখে অনেকেই বিস্মিত। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে। সৌরভ কি শুধু বাবার কর্তব্য পালন করছেন? নাকি সৌরভের উপর চাপ আসতে শুরু করেছে? নয়তো চাপ আসার আগে নিজেই বিতর্ক ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন দাদা?
উল্লেখ্য, ঘটনা প্রকাশ্যে আসে বুধবার সকালে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌরভ-তনয়া লেখক খুশবন্ত সিংয়ের ‘দ্য এন্ড অফ ইন্ডিয়া’ বইয়ের একটি অংশ শেয়ার করেছিলেন। যেখানে মোদী সরকারের নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতাকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। সানার এই অবস্থান নিয়ে সারাদিন প্রশংসার ঝড় চলার পর রাত সওয়া দশটা নাগাদ আচমকা একটি টুইট করেন সৌরভ। সেখানে তিনি লেখেন, “দয়া করে সানাকে এসব থেকে বাইরে রাখুন। এই পোস্ট একেবারেই সত্যি নয়। ও খুবই ছোট। রাজনীতির এই সব ব্যাপার ওর বোঝা সম্ভব নয়।”
এর কিছুক্ষণ পর আরেকটি টুইট করেন মহারাজ। তাতে দেখা যাচ্ছে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে একটি বড় হল ঘরের মাটিতে শুয়ে রয়েছেন সানা। সেই ছবি দিয়ে সৌরভ লেখেন, “১৪ বছরের স্কুল জীবনের শেষ রাতটা স্কুলেই কাটিয়েছে ওরা। এটা একটা দারুণ স্মৃতি হয়ে থাকবে। স্কুল জীবনটা ছিল দারুণ মজার।”
অনেকের মতে, সৌরভ বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁর কন্যা এখনও স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি। কিন্তু সানা গত নভেম্বরের ৩ তারিখ ১৮ বছর বয়সেক চৌকাঠ পেরিয়ে গিয়েছেন। এখন তিনি প্রাপ্তবয়স্কা। ফলে সৌরভের এই জোড়া টুইটের পরে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ফেসবুক টুইটারে। প্রথমত, পোস্টটি সত্যি নয় বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন সৌরভ? কেন তা মিথ্যে? কেউ যদি সানার প্রোফাইল হ্যাক করে তাহলে তো সৌরভের উচিত পুলিশের দ্বারস্থ হওয়া। দ্বিতীয়ত সানার ১৮ বছর বয়স হয়েছে। এই বয়সে ভারতীয়রা ভোটাধিকার পান। অর্থাৎ নির্বাচনে নিজের মত প্রকাশের অধিকার পান। সানারও নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। তাহলে কেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মেয়ের নিজস্ব মতামতের উপর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন
প্রসঙ্গত, আরব সাগরের তীরে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাটক হয়েছিল। ব্রিজেশ পটেলকে সভাপতি হিসেবে অভিন্দনবার্তা পাঠানোর পর সৌরভ জানতে পারেন, তিনিই সভাপতি হচ্ছেন। অনেকের মতে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটা ফোনেই নাকি সব ঘুঁটি ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই কৌতূহল তৈরি হয়েছিল, তাহলে কি গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন দাদা? অতি উৎসাহী কেউ কেউ আবার বলতে শুরু করেছিলেন, একুশের ভোটে বাংলা বিজেপির মুখ হতে পারেন সৌরভ।
মেয়েকে ছোট এবং পোস্টকে ভুয়ো বলার পর সেসব প্রশ্নগুলিই আবার নতুন করে চাগার দিয়েছে। কেউ বিদ্রুপ করে লিখেছেন, “দাদা আপনি বোধহয় জয় শাহকে ট্যাগ করতে ভুলে গেছেন।” কেউ আবার লিখেছেন, “দাদা, আপনাকে এমন মাথা নোয়াতে দেখে কষ্ট হচ্ছে।” কেউ এসে সৌরভের টুইটের নীচে লিখেছেন, “সব দাদাগিরি শেষ হয়ে গেল নাকি!” এক টুইটারেত্তি সৌরভের টুইটের অনুরোধের সুরেবলেন, ‘‘আপনি যেমন খেলোয়াড়দের নেতা হিসেবে অবাধ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, সানাকেও দিন না।’’ কেউ আবার লেখেন, ‘‘এবার হয়তো দেখব, সানা টুইটরে লিখেছেন—আমার বাবাকে নোংরা রাজনীতিতে জড়াবেন না। তিনি বিভাজনের রাজনীতির কচকচি বোঝার মতো পরিণত নয়।’’