ভারতে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আগেই অসন্তোষের কথা জানিয়েছিল আমেরিকা। এবার ভারতের নানা প্রান্তে ওই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও পুলিশি দমনপীড়ন নিয়ে বিবৃতি দিল সেদেশের বিদেশ দফতর। বিক্ষোভকারী ও সরকার, উভয়ের কাছেই তারা আবেদন জানিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বলেছে, সংযত হোন। সেইসঙ্গে সরকারকে বলেছে, শান্তিপূর্ণ জমায়েতের অধিকারকে সম্মান করুন।
আমেরিকা স্পষ্ট বলেছে, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ভারতে কী হচ্ছে সেদিকে নজর আছে তাদের। মার্কিন বিদেশ দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ভারতে যা ঘটছে তার দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, শান্তিপূর্ণ জমায়েতের অধিকারকে সম্মান করুন। বিক্ষোভকারীদের কাছে আমাদের আবেদন, হিংসাত্মক কিছু ঘটাবেন না।’
এর পরে বলা হয়েছে, ভারত ও আমেরিকা, দু’টি দেশই ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আইনের চোখে সমান অধিকারে বিশ্বাসী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে আবেদন জানাচ্ছে, সেদেশের সংবিধান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর অধিকারকে যেন সুরক্ষিত রাখা হয়।
এর আগে মার্কিন কূটনীতিক স্যাম ব্রাউনব্যাক টুইট করে বলেছেন, ‘ভারতে শক্তির অন্যতম উৎস হল তার সংবিধান। ভারতের সহযোগী গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে আমরা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলিকে সম্মান করি। সিএবি বিলের কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’ পরে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, ভারতের সংবিধানে ধর্মাচরণের স্বাধীনতার যে অধিকার দেওয়া আছে, সরকার তা রক্ষা করবে।’
মার্কিন কংগ্রেসে কাশ্মীর ও আসামের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গ্রেগরি স্ট্যানটন নামে এক বিশেষজ্ঞ। তিনি একসময় বিদেশ দফতরে কাজ করতেন। কীভাবে গণহত্যা ঘটে তার ওপরে স্ট্যানটনের গবেষণা আছে। তাঁর গবেষণাপত্রের নাম ‘টেন স্টেজেস অব জেনোসাইড’। ১৯৯৬ সালে তিনি গবেষণাপত্রটি বিদেশ দফতরের সামনে পেশ করেন। মার্কিন কংগ্রেসে তিনি যাতে ভাষণ দেন, সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছিল আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল, এনগেজ অ্যাকশন ও হিন্দুস ফর হিউম্যান রাইটস নামে তিনটি সংগঠন।
স্ট্যানটন বলেন, আসাম থেকে মুসলিমদের তাড়ানোর অজুহাত তৈরি করা হচ্ছে। তাঁর মতে, কাশ্মীর ও আসামেও গণহত্যা চলছে। তাতে প্রমাণিত হয়, ‘টেন স্টেজেস অব জেনোসাইড’ গবেষণাপত্রে যা বলা হয়েছে, তা সত্য।