অল্পের জন্য পচা শামুকে পা কাটা থেকে রক্ষা পেল ইস্টবেঙ্গল। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগে মার্তির গোলে নাটকীয় জয় পেলো লাল-হলুদ ব্রিগেড। এই ম্যাচ জিতে ৪ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে আই লিগ টেবিলের শীর্ষে ইস্টবেঙ্গল। তবে এরপরেও ডার্বির আগে লাল-হলুদ শিবিরে উদ্বেগ।
শনিবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে মার্তি ক্রেসপি গোল করতেই লাফিয়ে উঠলেন আলেহান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া। দু’হাত শূন্যে তুলে আনন্দে চিৎকার করে গ্যালারির সামনে চলে যান তিনি। দর্শকদের অনুরোধ করলেন উৎসবে যোগ দিতে। আলেহান্দ্রোকে এর আগে কখনও এ ভাবে আবেগে ভেসে যেতে দেখা যায়নি। বোঝা যাচ্ছিল, ট্রাউয়ের মতো দলের বিরুদ্ধেও তিনি কতটা চাপে ছিলেন।
ম্যাচ দেখতে আসা প্রায় ১০ হাজার জন লাল-হলুদ সমর্থকদের রক্তচাপও আলেহান্দ্রোর মতোই বেড়ে গিয়েছিল। ট্রাউয়ের বিরুদ্ধে ১৭ মিনিটে মার্কোস এসপাদা মার্তিনের গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। তার কয়েক মিনিট পরেই সামাদ আলি মল্লিকের শট ক্রসবার ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। অভিষেক আম্বেকরের শট দুর্দান্ত ভাবে বাঁচান ট্রাউ গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ। এই পরিস্থিতিতে প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ে গোল করে ট্রাউয়ের ডিফেন্ডার দীপক দেবরানি সমতা ফেরাতেই আতঙ্ক গ্রাস করতে শুরু করে লাল-হলুদ সমর্থকদের। গোটা দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশ কয়েকবার চেষ্টা করলেও গোলের মুখ খুলছিল না। শেষপর্যন্ত ৮৯ মিনিটে ক্রেসপি তাঁদের উদ্ধার করেন।
দিন তিনেক আগে কল্যাণীতে এই ট্রাউকেই ৪-০ হারিয়েছিল মোহনবাগান। সেই দলকে হারাতে কেন হিমশিম খেল ইস্টবেঙ্গল? এর নেপথ্যে উঠে আসছে বেশ কিছু কারণ। প্রথম কারণ অবশ্যই স্ট্রাইকিং লাইনে মার্কোসের একা হয়ে যাওয়া। এই ম্যাচে মার্কোসের সঙ্গে রোনাল্ডো অলিভিয়েরাকে ফরোয়ার্ডে রাখেন আলেহান্দ্রো। সমালোচনায় বিদ্ধ স্পেনীয় স্ট্রাইকার গোল করে এদিনও কোচের আস্থার মর্যাদা দিলেন। চার ম্যাচে তিনটি গোল তাঁর। কিন্তু সতীর্থের কাছ থেকে তিনি সে ভাবে সাহায্যই পেলেন না। নির্বাসিত খাইমে কোলাদোর শূন্যস্থান রোনাল্ডোকে দিয়ে পূরণ করার কথা ভেবেছিলেন আলেসান্দ্রো। কিন্তু তিনি সেরকম কোনো সুবিধাই করে উঠতে পারেননি। শেষ অবধি ৬৫ মিনিটে তাঁকে তুলে বিদ্যাসাগর সিংহকে নামান আলেসান্দ্রো। যারপরেই তেজ বাড়ল ইস্টবেঙ্গল আক্রমণের।
দ্বিতীয় কারণ, কোলাডোর ছিটকে যাওয়া। যার ফলে ছন্দ কেটে গেল মাঝমাঠে। হুয়ান মেরা গঞ্জালেস গত তিনটি ম্যাচে মাঠে নেমে ফুল ফুটিয়েছিলেন, এ দিন তিনি চেষ্টা করলেও একার কৃতিত্বে সফল হচ্ছিলেন না। মার্কোস, কোলাডো ও হুয়ান যেন একে অপরের পরিপূরক। এক জন না থাকলেই সুর কেটে যায়। চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি পিন্টু মাহাতোকেও। তবে শেষ অবধি ম্যাচ থেকে ৩ পয়েন্ট পেয়ে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। ট্রাউ ম্যাচ এখন অতীত। এবার স্প্যানিশ কোচের লক্ষ্য ২২ তারিখের ডার্বি।