ক্যাব পাশ হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে গোটা দেশ। তেতে উঠেছে উত্তর-পূর্ব ভারত সহ বাংলা। পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে জারি করতে হয়েছে কার্ফু। বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। রাস্তায় নেমেছে সেনা। এমনকি আসামে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এহেন পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও মাথা নোয়ালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার তিনি ইঙ্গিত দিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের কথা বিবেচনা করে প্রয়োজনে নাগরিকত্ব আইনে কিছুটা বদল আনবেন তিনি।
ক্যাব পাশ হওয়ার পর গত কয়েকদিনে চরমতম পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে গোটা দেশে। এরই মাঝে শুক্রবার মেঘালয়ে এক জনসভা করেন অমিত শাহ। সেখানেই এই আইন সংশোধনের বিষয়ে হালকা একটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এবং তাঁর মন্ত্রীরা শুক্রবার আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং রাজ্যে কী পরিস্থিতি চলছে সে বিষয়ে বিশদে আমায় জানিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা আমার কাছে অনুরোধ করেছে সদ্য পাশ হওয়া এই আইনে কিছু বদল আনার জন্য। আমি তাঁদের জানিয়েছি কিছুদিন পর আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। আশ্বস্ত করেছি, ওই সময় এই আইন নিয়ে বিস্তারিত একটি আলোচনা হবে। এবং আইনের জন্য মেঘালয়ের স্বার্থে যদি কোনও আঘাত লেগে থাকে তবে তা সমাধানের চেষ্টা হবে।’
আমিত শাহের এহেন মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলের অনুমান চাপের মুখে পড়ে এবার হয়ত উত্তর-পূর্বের কথা মাথায় রেখে আইনে কিছুটা পরিবর্তন আনবে মোদী সরকার। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে মুখ খোলেননি কেউ। পরিস্থিতি থামাতে আপাতত ইঙ্গিতটুকু দিয়েছেন শাহ। তবে এদিন শুধুমাত্র মেঘালয়ের কথাই বলেছেন শাহ। উত্তর-পূর্বের বাকি রাজ্য আসাম, ত্রিপুরার কথা মুখেও আনেননি তিনি।
উল্লেখ্য, লোকসভার পর রাজ্যসভায় পাশ করে যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এরপর মাঝরাতে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে আইনের মর্যাদা পায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। তবে এই আইনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে জনমানসে। ধর্মের ভিত্তিতে আনা এই আইন ভারতের সর্বভৌমত্বে আঘাত বলেই আঙুল তুলছেন বেশীরভাগ মানুষ। তারপরেই জ্বলে উঠেছে উত্তর-পূর্ব, বাংলা সহ গোটা দেশ। তারফলেই অমিত শাহ চাপের মুখে পড়ে কিছুটা নত হলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের।