সোমবার লোকসভায় প্রায় ৭ ঘণ্টার হই-হট্টগোলের পর মধ্যরাতে পাশ হয়েছিল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)। আর তারপর দীর্ঘ বিতর্ক-আলোচনা চলার পর অবশেষে বুধবার রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে যায় তা। যার পর থেকেই জ্বলছে আসাম-সহ প্রায় গোটা উত্তর-পূর্বই। তবে বাংলাতেও এবাত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে নতুন করে আন্দোলনে নামতে চলেছেন মতুয়ারা। সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের নেতৃত্বে এই আন্দোলন সংগঠিত হবে। বৃহস্পতিবারই এ ব্যাপারে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দেন মমতাবালা।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব সংশোধন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে মতুয়া মহাসঙ্ঘ। সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা প্রমথরঞ্জন ঠাকুর থেকে শুরু করে তাঁর স্ত্রী বীণাপাণি ঠাকুর, পরে তাঁর পুত্র কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং তাঁর স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর-সহ ঠাকুরবাড়ির প্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তাঁদের একটাই বক্তব্য, ওপার বাংলা থেকে পরিস্থিতির কারণে যেসব মানুষ এদেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন তাঁদের নিঃশর্তে নাগরিকত্ব দিতে হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এই বিলটি পাশ করার জন্য একাধিকবার সংশোধনী এনেছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই এ ব্যাপারে সুর চড়িয়েছিলেন মমতাবালা এবং তাঁর সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এবার বিলের সংশোধনী সংসদের উভয় কক্ষেই পাশ হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার ঠাকুরবাড়িতে বসে তিনি বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনীর যে বিল পাশ হয়েছে, তাতে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। আমাদের আগাগোড়াই দাবি ছিল নিঃশর্ত নাগরিকত্বের। কিন্তু যে বিল পাশ করা হয়েছে, তাতে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখকে ধরে ৬ বছর এদেশে বসবাস করার পাশাপাশি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে। পরে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য কোনও নথি দাখিল করারও নিয়ম আনা হতে পারে। ফলে, আমরা যে দাবিতে এতদিন আন্দোলন চালিয়ে আসছি, তা পূরণ হয়নি। তাই এর প্রতিবাদে সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে নতুন করে আন্দোলন করা হবে।’