সোমবার লোকসভায় প্রায় ৭ ঘণ্টার হই-হট্টগোলের পর মধ্যরাতে পাশ হয়েছিল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)। আর তারপর দীর্ঘ বিতর্ক-আলোচনা চলার পর অবশেষে বুধবার রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে যায় তা। তবে সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ হওয়ার পর থেকেই জ্বলছে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশ। আসাম-সহ ত্রিপুরায় ছড়িয়েছে বিক্ষোভের আঁচ। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এই বিক্ষোভে বিরাম আসবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ভয়ে কার্ফু জারি করে সেনা নামানো হয়েছে আসামে। অগ্নিগর্ভ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে গুয়াহাটিতে। ১৪৪ ধারা জারি হওয়ার পাশাপাশি ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কান্ডে কাটজু জানতে চাইলেন, কাশ্মীর-অসমের পর কোন রাজ্যের পালা?
বুধবার আসামে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদী সরকারের উদ্দেশ্যে কাটজু এই প্রশ্ন করেন যে, ‘প্রথমে কাশ্মীর, এরপর অসম। এবার ইন্টারনেটের মতো জরুরি পরিষেবা আর কোথায় কোথায় বন্ধ হবে?’ উল্লেখ্য, আসামে প্রথমে ২৪ ঘণ্টার জন্য কার্ফু জারির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু রাত বাড়তেই তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই নিয়েই মোদী সরকারকে নিশানা করে শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি টুইটারে লিখেছেন, ‘আসামও কাশ্মীরের মতো জ্বলছে। দেশে আগুন লাগিয়ে এই ‘নিরোরা’ নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছে। হনুমানজি তো কেবল লঙ্কা জ্বালিয়েছিলেন, এই আধুনিক হনুমানগুলো তো পুরো দেশে আগুন লাগিয়ে দেবে।’ অনেকেই বলছেন, প্রকৃতপক্ষেই যেন কাশ্মীরের পরিস্থিতি অনুভব করতে করতে পারছে আসাম। কারণ দুই রাজ্যেই, কোথাও ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুবিধা নেই। তবে পার্থক্য এটুকুই যে, এক রাজ্যে ভয়ে সিঁটিয়ে গৃহবন্দী থাকতে হচ্ছে। আরেক রাজ্য বিক্ষোভে ক্রমশ জতুগৃহের রূপ নিচ্ছে।