ইংরেজিতে শুরু করেছিলেন বক্তৃতা। তারপর দেশগঠনে স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র বসু ও জহরলাল নেহেরু ভূমিকা, ধর্মীয় বিভাজনের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের কবিতা হয়ে শেষ করেছেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায় দিয়ে। মঙ্গলবার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের আলোচনায় তাঁর জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে নজর কাড়লেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, ৩২ বছর বয়সী অভিষেক এবার দ্বিতীয় বারের জন্য ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ হয়ে সংসদে এসেছেন। ওদিকে, অমিত শাহ সাংসদ হয়ে লোকসভায় এসেছেন এইবারই, মাত্র ছ’মাস হল। সেই শাহই কিনা বললেন, ‘অভিষেককে ছ’বছরে প্রথম শুনলাম।’ শাহের এই উক্তি তাঁর দলের অনেকেই হজম করে উঠতে পারছেন না। তবে জবাবি ভাষণে শাহ স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘উনি অত্যন্ত ভাল বলেছেন।’
উল্লেখ্য, ক্যাব পেশ হওয়ার সময় সংসদে ছিলেন না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর দলের যুব নেতা গৌরব গগৈয়েরে আক্রমণ তেমন ঝাঁঝালো ছিল না। কিন্তু অভিষেকের একের পর এক প্রশ্নবাণ জর্জরিত করেছে মোদী সরকার তথা শাসক দলকে। তৃণমূলের এই যুব নেতাই একমাত্র এনআরসি এবং ক্যাবকে এক পংক্তিতে বসিয়েছেন। ক্যাবকে আখ্যা দিয়েছেন ভারতীয়-বিরোধী ও বাংলা-বিরোধী।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের বক্তা হিসেবে অভিষেক যখন বলছিলেন, তখন বেশ কয়েকবার তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে হইহই করে ওঠেন বিরোধী সদস্যরা। আর অভিষেকও মোদী সরকারের দিকে ছু্ঁড়ে দিতে থাকেন একের পর এক প্রশ্ন। কখনও তিনি এই প্রশ্ন তোলেন যে, ১২৬ বছর আগে শিকাগোয় বিবেকানন্দের বক্তৃতা ঠিক, নাকি শাহের?
কখনও আবার প্রশ্ন তোলেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলে শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমারের উদ্বাস্তুদের বাদ দেওয়া হল কেন? এরপর সংখ্যালঘু প্রশ্নে সরকারের কাছে তিনি জানতে চান, অসুস্থ হলে ডাক্তারকে কি জিজ্ঞেস করেন তিনি হিন্দু না মুসলিম? তাহলে নাগরিকত্ব দেওয়ার সময় কেন ধর্মবিচার? বস্তুত গতকাল লোকসভায় গোটা বিরোধী শিবিরকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন অভিষেক।