লোকসভায় ক্যাব পাশ হওয়ার পর আজ সকালে রাজ্যসভায় পেশ হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। দেশের রাজধানীতে যখন এরকম বড় একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ হতে চলেছে, ঠিক তখনই ক্যাব নিয়ে বিক্ষোভকারীদের থামাতে সেনা নামল ত্রিপুরা ও আসামে। নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে কয়েকদিন ধরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে প্রায় পুরো উত্তর-পূর্ব ভারত। একটি সূত্রে খবর, ত্রিপুরার কাঞ্চাপুর ও মানু অঞ্চলে সেনাবাহিনীর দু’টি কলামকে পাঠানো হয়েছে। অপর একটি কলামকে পাঠানো হয়েছে আসামের বঙ্গাইগাঁওতে। প্রতিটি কলামে কমপক্ষে ৭০ জন সৈনিক থাকেন। তাঁদের নেতৃত্বে থাকেন একজন অথবা দু’জন অফিসার।
বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় ত্রিপুরা সরকার গতকালই ইন্টারনেট ও মোবাইলে এসএমএস পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভের মধ্যে ত্রিপুরায় মৃত্যু হয় একটি দু’মাসের শিশুর। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাঁকে সেপাহিজলায় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পথ অবরোধ করায় তাঁকে শেষ অবধি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়নি। পথেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।
এদিন আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বন্ধ ডাকে আসামের সমস্ত ছাত্র সংগঠন এবং নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন। এসএফআই, ডিওয়াইএফআই, এআইএসএফ, আইসা-সহ একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠনও সামিল হয়েছে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিলে। গুয়াহাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় উঠেছে ক্যাব বিরোধী স্লোগান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুশপুতুলও পোড়ায় বিক্ষোভকারীরা। রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে প্রতিবাদ। ডিব্রুগড় জেলায় সিআইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বন্ধ সমর্থকদের। দুলিয়াজান জেলায় অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেডের অফিসে কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেয় বিক্ষোভকারীরা। সেই সময় দু’পক্ষের হাতাহাতিতে দু’জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে খবর।
পুরাকে নাগরিকত্ব বিলের আওতা থেকে বাইরে রাখার দাবিতে মঙ্গলবার আগরতলায় বিক্ষোভ দেখায় জনতা। ধলাই জেলায় একটি বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয় তাঁরা। আসাম এবং ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্য এখন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে। বুধবারও বনধের জেরে পরিস্থিতি বেসামাল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আসামের বেশ কিছু এলাকায় ইতিমধ্যেই ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে বলে খবর।