উত্তর-পূর্বাঞ্চল নয়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে তৎপরতা আসলে বাংলার উপর বিশেষ নজর রেখেই। এমনটাই মনে করেন রাজ্যসভার প্রাক্তন শিবসেনা সাংসদ, সাংবাদিক, কবি ও চিত্র প্রযোজক প্রীতিশ নন্দী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন প্রেসিডেন্সি কলেজের এই প্রাক্তনী। বুধবার সকালে এক ট্যুইটে প্রীতিশ নন্দী লেখেন, আসাম-সহ উত্তর-পূর্ব যখন সংশ্লিষ্ট বিলের বিরোধিতায় উত্তপ্ত, তখন বিজেপি সরকারের এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-প্রীতি আসলে বাংলাকে লক্ষ্য করেই।
‘ক্যালকাটা ইফ ইউ মাস্ট এক্সাইল মি’-র লেখক প্রীতিশ ট্যুইটে লেখেন, বাংলায় ক্ষমতা দখল ও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতেই এনআরসি বা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু তা হওয়ার নয়। প্রীতিশের বিশ্বাস, ‘যতদিন পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আছেন, ততদিন বিজেপির এই ফন্দি কিছুতেই খাটবে না।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথদের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা বারবার বাংলায় এনআরসি-র পক্ষে সওয়াল করেছেন। এ রাজ্যে তাঁরা ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের গলা ধাক্কা দিয়ে বার করা হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। লোকসভা ভোটে বাংলায় ১৮ টি আসন পেয়ে যাওয়ায় বিজেপির আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ওঠে। তাই বাংলায় এনআরসি প্রচারেই বিশেষ জোর দেয় বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু সম্প্রতি খড়গপুর, করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জ, তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের কাছে গো-হারা হারে পদ্ম শিবির। সেই হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দিলীপ ঘোষরা কার্যত স্বীকার করেই নিয়েছেন, এনআরসি নিয়ে মানুষের কাছে ‘ভুল বার্তা’ যাওয়ায় এই ফল। এদিকে বাংলায় এনআরসি নয়, এই দাবিতে প্রথম থেকেই অনড় অবস্থান নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দিন আগেও তিনি হুমকি দিয়েছেন, প্রাণ থাকতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা এনআরসি বাংলায় লাগু হতে দেবেন না। এবার কেন্দ্রের এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে মমতার পাশে দাঁড়ালেন একাধিক সংসদীয় কমিটির প্রাক্তন সদস্য ও সমাজকর্মী প্রীতিশ নন্দী।