অবশেষে নিজেই ইতি ঘটিয়ে দিলেন এতদিন ধরে চলা তুমুল বিতর্কের। সংস্কৃত বিদ্যা ধর্ম বিজ্ঞানের সহ-অধ্যাপকের পদ থেকে এদিন সরে দাঁড়ালেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিরোজ খান। ঠিক করেছেন, কলা বিভাগে সংস্কৃত পড়াবেন। যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
সংস্কৃত বিভাগে মুসলিম অধ্যাপকের নিযুক্তি নিয়ে তুঙ্গে পৌঁছেছিল বিতর্ক। কোনও অহিন্দু ব্যক্তির কাছ থেকে তাঁরা বৈদিক ভাষার পাঠ নেবে না। এই দাবিতেই ছাত্রদের একাংশ তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এহেন পরিস্থিতিতে ফিরোজ খান জানিয়েছিলেন, কোরানের চেয়েও সংস্কৃত ভাল জানেন তিনি। কিন্তু প্রায় এক মাস ধৈর্য ধরে থাকলেও তাঁকে কেন্দ্র করে হুমকি ও সমালোচনা বন্ধ হয়নি তাঁর। কোনও বৈঠক-আলোচনাতেই মেলেনি সমাধানসূত্র। সেই কারণে শেষমেশ কঠিন সিদ্ধান্তটা একপ্রকার বাধ্য হয়েই নিয়ে ফেললেন অধ্যাপক।
গত নভেম্বরেই বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) সংস্কৃত বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন ফিরোজ খান। তারপরই দানা বাঁধে বিতর্ক। পড়ুয়াদের একাংশ দাবি করে বসে যে মুসলিম শিক্ষকের কাছ থেকে তাঁরা সংস্কৃতের পাঠ নেবেন না। এই বিরোধিতায় ছাত্রদের পাশে দাঁড়ায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত মনোক্ষুণ্ণ হন সংস্কৃতে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী ফিরোজ খান।
সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দ্বিতীয় শ্রেণি থেকেই সংস্কৃত নিয়ে পড়াশোনা করে এসেছি। আমার এলাকায় অন্তত ৩০ শতাংশ মুসলমান থাকা সত্ত্বেও কোনওদিন আলাদা করে আমার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। বহু পরিচিত হিন্দু বন্ধু ও প্রবীণরা আমার প্রশংসা করেছেন। আজ যখন আমি শিক্ষকতা করতে যাব, তখন আমার ধর্মকে টেনে আনা হচ্ছে।’ তিনি আশা করেছিলেন, তাঁর ছাত্ররা মন পাল্টাবে। কিন্তু তেমন কিছুই না হওয়ায় অবশেষে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ফিরোজ খান।