হায়দ্রাবাদ গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের এনকাউন্টারের সিদ্ধান্ত নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলে দিলেন খোদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে। সরাসরি প্রশ্ন না তুললেও তেলেঙ্গানা পুলিশের আইন হাতে তুলে নেওয়া এবং এই ‘সিঙ্ঘম’ মার্কা ফিল্মি ভূমিকায় যে তিনি খুশি নন, তা বুঝিয়ে দিলেন। শনিবার রাজস্থানের যোধপুরে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ন্যায়বিচার কখনই চোখের পলকে হওয়া সম্ভব নয়। এবং ন্যায় যদি প্রতিশোধের রূপ নেয়, তবে তা নিজের চরিত্র হারিয়ে ফেলে। পুলিশি এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের মৃত্যুর পরদিনই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যটি করেন বোবদে। বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকার মহল পুলিশের এই ভূমিকার সমালোচনা করলেও তথাকথিত পাবলিক বা নেটজেনরা যারপরনাই খুশি এনকাউন্টারে।
যদিও নিজের বক্তব্যে একবারও হায়দ্রাবাদের নাম উল্লেখ করেননি প্রধান বিচারপতি। তবে কী উদ্দেশ্যে তিনি সেই কথা বলেছেন তা কারোরই বুঝতে আর বাকি নেই। রাজস্থানের হাইকোর্টে নতুন একটি ভবনের উদ্বোধন ছিল। সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েই ‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলি’র কথা উল্লেখ করে এই বক্তব্য রাখেন বোবদে। এই বক্তব্যের সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও। তাঁর সামনেই প্রধান বিচারপতিকে বলতে শোনা যায়, ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত এবং রায় দিতে যত সময় লাগে, সেই বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করে দেখার সময় এসেছে।
প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘ন্যায়বিচার কখনই তাৎক্ষণিক হতে পারে না। ন্যায়বিচারকে কখনই প্রতিশোধের রূপ দেওয়া উচিত নয়। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিশোধ নেওয়ার মানসিকতায় ন্যায়বিচার তার চরিত্র হারাতে পারে।’ তবে বিচার বিভাগে সংশোধন ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি। শুধু দ্রুত বিচারের বানী শোনালে হবে না। অপরাধ প্রবণতা কমাতে হবে বলেও জানান তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের অন্যান্য পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। শুধু মামলা-মোকদ্দমা দ্রুত নিষ্পত্তি করার স্বার্থে নয়, একসঙ্গে এগুলিকে প্রতিরোধও করতে হবে।’