তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, উন্নাও, বুলন্দশহর, একের এক গণধর্ষণ, খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত দেশ। সারা দেশের প্রতিবাদের সুর চড়া। প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোণামে দেশের কোনও না কোনও প্রান্তে ধর্ষণ বা খুনের খবর সামনে আসছে। এই আবহেই দেশের নারী নির্যাতন ও মহিলাদের ওপর হওয়া অপরাধের জন্য পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই দায়ী করলেন ওয়াইনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শনিবার চাঁচাছোলা ভাষায় নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্দে আক্রমণ শানান রাহুল গান্ধী। এদিন তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের প্রধান যিনি দেশ চালাচ্ছেন তিনিই হিংসা ও বিভেদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, তাই এই ধরণের ঘটনা ঘটে চলেছে দেশে। ভারত বিশ্বের ধর্ষণের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেন রাহুল। বিদেশী রাষ্ট্রগুলো আমাদের কাছে প্রশ্ন করছে কেন ভারত দেশের মা-বোনেদের রক্ষা করতে পারে না। কংগ্রেস নেতার মন্তব্য ভীষণই তাৎপর্যপূর্ণ, বিশেষত এই পরিস্থিতিতে যখন হায়দরাবাদ গণধর্ষণ-খুন উন্নাওতে ধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারার মত ঘটনায় উত্তাল দেশ।
দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ভেঙে পড়ছে। এর জন্যই দেশের জনতা আইনকে নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন। এর একমাত্র কারণ যিনি আমাদের দেশ চালাচ্ছেন, যাঁর হাতে আমাদের দেশের দায়িত্ব সেই মানুষটিই হিংসা ও বিভেদের শক্তিতে বিশ্বাস করেন। এর জন্যই এই ধরণের ঘটনা বারবার দেশে ঘটছে। কেরালার ওয়াইনাড়ে এক কর্মিসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে এমনই অভিযোগ করেন রাহুল গান্ধী। এদিনের কর্মিসভা থেকে প্রত্যক্ষভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপিকে নিশানা করেন। উন্নাও-এ অন্য একটি গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত কূলদীপ সেঙ্গারের প্রসঙ্গ টেনে তুলোধনা করেন মোদী সরকারকে। একজন বিজেপি বিধায়ক এক মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনায় যুক্ত আর প্রধানমন্ত্রীর মুখে একটি শব্দ নেই কেন। প্রশ্ন রাহুলের। উন্নাও-এর ওই নির্দোষ মেয়েটির মৃত্যু ভীষণই দুঃখের ও হৃদয়বিদারক। এই ঘটনা মানবিকতার লজ্জা। আমি ভীষণ ক্রোধিত ও অবাক হচ্ছি এই ঘটনায় দেশের আরও এক বেটি ন্যয়বিচার পাওয়ার আগেই চলে গেল। মোদী সরকারের বিরুদ্দে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন রাহুল গান্ধী। এদিন মৃত যুবতীর পরিবারের পাসে থাকার বার্তা দিয়ে ওর পরিবারের প্রতি সমবেদনা কংগ্রেস সাংসদ। ২৩ বছর বয়সী মৃত যুবতীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্দী বঢড়া।
প্রসঙ্গত, উন্নাও-এ ধর্ষিতার মৃত্যুর ন্যয়বিচারের বিচারের দাবি জানিয়ে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের দাবি রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ যোগী সরকার। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করে লখনউ-এ রাজ্য বিধানসভার সামনে ধর্ণায় বসেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব।