বুধবার সকালেই মন্ত্রীসভার বৈঠক ডেকে তড়িঘড়ি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)-এ অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। গতকাল সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ মন্ত্রীসভার বৈঠক বসে। ওই বৈঠকেই বিলের খসড়া পেশ করেন শাহ। পরে সরকারি সূত্রে জানানো হয়, প্রস্তাবিত সংশোধন বিলে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে মন্ত্রীসভা। শীতকালীন অধিবেশনেই সংসদে পেশ করা হবে তা। তবে লোকসভা বা রাজ্যসভা, যেখানেই এ বিল পেশ করা হোক না কেন, তার বিরোধিতা করবে তৃণমূল। এবং এ কাজে দলের সাংসদ তথা যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, এ সপ্তাহের শেষে বা আগামী সপ্তাহের গোড়ায় নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আলোচনা হবে সংসদের দুই কক্ষে। এই বিতর্কে তাঁর দল আগ্রাসী ভূমিকা নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর সর্বাত্মক বিরোধিতা করা হবে। দলের তরফে লোকসভায় বলবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এটি ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কৌশল বলে চিহ্নিত করে আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় যৌথ কমিটিতে চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সৌগত রায় এবং রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। তাতে বলা হয়েছিল, এনআরসি-র ফলে যে ৪০ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২৮ লক্ষ বাঙালি হিন্দু। ১০ লক্ষ বাঙালি মুসলিম। সিএবি হলে ওই ২৮ লক্ষ বাঙালি হিন্দু নিজেদের শরণার্থী বলে আবেদন করতে বাধ্য হবেন। আর ১০ লাখ বাঙালি মুসলিমকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষরা সুবিধা পেলে কেন মুসলিমরা এর বাইরে থাকবেন? কমিটিতে এই বিলটি আলোচনা করে দেখা যাচ্ছে, সুচিন্তিত ভাবে বিজেপি বিভেদকামী পরিকল্পনা চরিতার্থ করতে চাইছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করাই এই বিলের মূল উদ্দেশ্য। সে জন্য এই বিল খারিজের দাবি তুলবে তৃণমূল।