এনআরসি বিজেপির কাছে ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি বাংলার ৩ বিধানসভা উপনির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ে প্রাথমিকভাবে এনআরসিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। সেই এনআরসিকে হাতিয়ার করে এবার মতুয়া ভোট সংগঠিত করতে চলেছে তৃণমূল।
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের জন্য ইতিমধ্যে আলাদা কমিটি তৈরি করেছে তৃণমূল। ওই কমিটিতে থাকছেন ২৬ সদস্য, যাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনআরসি-র প্রভাব তুলে ধরবেন। উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরা হবে আসামে ১২ লক্ষ এনআরসি ছুট হিন্দুদের অভিজ্ঞতা। লোকসভা ভোটের সময় মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে বিজেপি বুঝিয়েছিল, বাংলায় এনআরসি হলে হিন্দুদের কোনও ভয় নেই। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার পরেই তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বিজেপির এই প্রচারে সুফলও মেলে। বনগাঁ লোকসভার ৭ বিধানসভার মধ্যে ৬ বিধানসভাতে ব্যাপকভাবে বিজেপি থাবা বসায়। এখানে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট রয়েছে মতুয়ার।
বনগাঁ লোকসভায় বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর জয়লাভ করেন প্রায় এক লক্ষের বেশি ভোটে। একমাত্র স্বরূপনগর ছাড়া বাকি বিধানসভায় তৃণমূলকে বলে বলে দশ গোল দিয়েছে। লোকসভা ভোটের ফল পরীক্ষা-নিরিক্ষা করেই ময়দানে নামছে তৃণমূল। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরও জোর দিয়েছেন জনজাতির ভোটের উপর। পিকে-র মতে, যদি তফসিলি-উপজাতিদের ভোট নিজেদের দখলে রাখতে পারে, তাহলে ২০২১ অনায়াসে বাজি মারতে পারে তৃণমূল।
পরিসংখ্যান বলছে, ৫০ টার বেশি বিধানসভায় মতুয়া ভোটের প্রভাব রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বনগাঁ, নদীয়া, হুগলী, হাওড়া। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই সব জেলাতেই পৃথকভাবে কমিটি তৈরি করা হবে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, এই কমিটি এনআরসি, নাগরিকপঞ্জি কতটা খারাপ গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হিন্দু, তাহলে ফের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে যাবো কেন? নাগরিকত্ব বিল মানুষের ক্ষতি হবে।’