ঝাড়খণ্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই গোটা দেশের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি) তৈরি করে প্রত্যেক অনুপ্রবেশকারী বিদেশিকে তাড়ানো হবে। সেই লক্ষ্যে যে বিজেপি অবিচল, তা স্পষ্ট হয়ে গেল আজই। বুধবার সকালেই মন্ত্রীসভার বৈঠক ডেকে তড়িঘড়ি নাগরিকত্ব বিলে যে অনুমোদন দিয়ে দিল মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, এদিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ মন্ত্রীসভার বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের খসড়া পেশ করেন শাহ। পরে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবিত সংশোধন বিলে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে মন্ত্রীসভা। এ-ও জানা গিয়েছে, মন্ত্রীসভার বৈঠকে শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’জনেই বলেন সংসদের ভিতরে এমন ভাবে কক্ষ সমন্বয় করে চলতে হবে যাতে চলতি শীত অধিবেশনেই তা লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ করানো যায়।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের মূল বক্তব্য হল, প্রতিবেশি দেশগুলি থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, জৈন, পারসি ও শিখ শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এর আগে সোমবার সংসদে দাঁড়িয়েও শাহহ পষ্টাপষ্টি বলেছেন যে, অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে থাকতে দেওয়া হবে না। সবাইকে বহিষ্কার করা হবে। আবার গতকাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছিলেন, নাগরিকত্ব সংশোধন বিল দ্রুত পাশ করানো সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের বিষয়।
সন্দেহ নেই এর একটি রাজনৈতিক দিক রয়েছে। আসলে।আসামে এনআরসি বাস্তবায়ন করার পর দেখা গিয়েছে, প্রচুর হিন্দুর নামও জাতীয় নাগরিক পঞ্জী থেকে বাদ পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসামের বিজেপি নেতারাই রাজনৈতিক ভাবে বিপন্ন বোধ করছেন। আবার বাংলাতেও সদ্য উপনির্বাচনে দেখা গিয়েছে, তিনটি আসনেই হেরেছে বিজেপি। দলের রাজ্য নেতারাই বলছেন নেতারা এনআরসি নিয়ে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্যই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে বিজেপি।
তবে এবার তাঁরা মনে করছেন, নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশ হলে উত্তর চব্বিশ পরগণা, নদীয়া এবং উত্তরবঙ্গের দুই দিনাজপুর, কোচবিহার সহ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলির শরণার্থী হিন্দুদের বিপুল সমর্থন পাবে বিজেপি। তাছাড়া তাতে বাংলায় মেরুকরণও সম্পূর্ণ হবে। যদিও সংসদে এই বিল পাশ করা যে মোটেই সহজ কাজ হবে না সে কথাও মানছেন তাঁরা। কারণ লোকসভা বা রাজ্যসভা, যেখানেই এই বিল পেশ করা হোক না কেন, তা রুখতে প্রবল বিরোধিতার পথে হাঁটবে তৃণমূল।