শিবসেনাকে রুখে দিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কতদূর পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েছিলেন তা কার্যত ফাঁস করে দিলেন শরদ পাওয়ার। তিনি বলেন, একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু তা আমি নাকচ করে দিয়েছি। সেই সঙ্গে পাওয়ার স্বীকার করেন, তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করার টোপও দেওয়া হয়েছিল।
একটি মারাঠি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা জানান পাওয়ার। যা নিয়ে মহারাষ্ট্র তো বটেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতেও হইচই পড়ে গিয়েছে। ওই সাক্ষাৎকারে পাওয়ার বলেন, ‘মোদী আমাকে বলেছিলেন, চলো একসঙ্গে কাজ করি। কিন্তু আমি তাঁকে বলি, না সেটা সম্ভব নয়। তোমার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। তা যেমন রয়েছে তেমনই থাকবে। কিন্তু তোমার সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।’
মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে যখন দোলাচল চলছে তখন গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন পাওয়ার। মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর পাওয়ার জানিয়েছিলেন, কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা করতেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার আগে ১৮ ডিসেম্বর সংসদের অধিবেশন বসতেই লোকসভায় দাঁড়িয়ে শরদ পাওয়ার ও তাঁর দল এনসিপির প্রশংসা করেছিলেন মোদী।
এতদিনে সেই বৈঠকের ভিতরের হাট খোলা হল। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল, এনসিপির সমর্থনের পরিবর্তে পাওয়ারকে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব নাকি দিয়েছিলেন মোদী-শাহ। কিন্তু পাওয়ার এদিন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব মোদী দেননি। তবে হ্যাঁ সুপ্রিয়াকে (শরদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সামিল করার প্রস্তাব অবশ্যই দিয়েছিলেন।’
কৌতূহলের বিষয় হল, শরদ পাওয়ার কেন এসব কথা ফাঁস করে দিলেন? কেন না রাজনীতিতে ব্যক্তিগত পরিসরে এ ধরনের আলোচনা বাইরে প্রকাশ না করাই দস্তুর। নইলে বিশ্বাস করে কেউ কোনও কথা বলবেন কেন? জবাবে শরদ পাওয়ারের ঘনিষ্ঠ নেতারা বলছেন, মোদীকে যা বলার তা পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিয়েছিলেন পাওয়ার। কিন্তু তার পরেও শরদ পাওয়ারকে একেবারে অন্ধকারে রেখে অজিত পাওয়ারকে ভাঙিয়ে নিয়ে যেভাবে রাজনৈতিক ক্যু করার চেষ্টা অমিত শাহরা করেছিলেন, তা ভালচোখে নেননি মারাঠা স্ট্রংম্যান। হতে পারে সেই কারণেই বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর টোপের কথা সবাইকে জানিয়ে দিলেন।