‘বুলবুল’-এ বিধস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণবঙ্গ। তবে মমতার আগাম ব্যবস্থাপনায় রেহাই পেয়েছিল বড় ক্ষতির থেকে। তবে তাও কিছু ক্ষতি এড়ানো যায় নি। সেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে তৎপর হয়েছে মমতার সরকার। কৃষকদের হাতে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে যাবে চলতি সপ্তাহে। নবান্ন সূত্রের খবর, কাল, সোমবার চাষীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকতে শুরু করবে।
‘ক্রপ রিহ্যাবিলিটেশন রিলিফ’ হিসেবে বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা হেক্টর পিছু সাড়ে ১৩ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। সর্বোচ্চ দু’একর জমির ক্ষতিপুরণ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এক জন চাষি সর্বাধিক ২৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপুরণ পাবেন। জমির পরিমাণ যদি কম হয়, সে ক্ষেত্রেও ন্যূনতম এক হাজার টাকা মিলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ডিসেম্বরের মধ্যেই বুলবুলের ক্ষতিপুরণ দেওয়ার কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। সেই মতো কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।
রাজ্য কৃষি দপ্তর থেকে নবান্নের পেশ করা রিপোর্টে রাজ্যের মোট ছ’টি জেলা মিলিয়ে প্রায় ১৪ লক্ষ ৯০ হাজার হেক্টর জমির ফসল বুলবুলে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক নষ্ট হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩ লক্ষ হেক্টর ধানের জমি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত, সব্জি খেত ৭৭ হাজার হেক্টর, ডালশস্য সাত হাজার হেক্টর, মশলা শস্য ৯২ হাজার হেক্টর। তা ছাড়া, ৫ হাজার হেক্টর জমির ফুলের বাগান ও ৪ হাজার হেক্টর জমির পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। কৃষি দপ্তরের বক্তব্য, টাকার অঙ্কে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১৪ হাজার কোটি টাকা।
বুলবুলের ক্ষতিপূরণ ছাড়াও চাষিরা ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে মাথাপিছু আড়াই হাজার টাকা করে সরকারি আর্থিক সাহায্য পাবেন। তা ছাড়া, যাঁদের কৃষি ফসল বিমা যোজনা করা রয়েছে, তাঁরা বিমা কোম্পানি থেকে আলাদা করে টাকা পাবেন। তবে সেই টাকা হাতে পেতে মাস তিনেক লাগতে পারে বলে কৃষি আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন।
কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আমরা যত দ্রুত সম্ভব বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে দেব। যাঁরা ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন, তাঁরা দু’-এক দিনের মধ্যেই টাকা হাতে পেয়ে যাবেন। সেই জন্য আমাদের অফিসাররা দিনরাত কাজ করছেন।’