অর্থনীতিতে লাল সঙ্কেত। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে, জিডিপি বৃদ্ধির হার আরও কমে দাঁড়াল ৪.৫ শতাংশ। যা গত ছ’বছরে সর্বনিম্ন। মোদীনমিক্সে দেশ কোমায় চলে গেছে বলে কটাক্ষ করেছেকংগ্রেস। তবে মোদী সরকার শনিবারও দাবি করেছে, সব ঠিক আছে। তৃতীয় ত্রৈমাসিকেই বাড়বে বৃদ্ধির হার। বিশেষজ্ঞরা বলছে, আমজনতার ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে না পারলে মুক্তি নেই।
২০২৪-এর মধ্যে, ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বপ্নের মধ্যেই রোজ আরও তলিয়ে যাচ্ছে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি। বিশ্বব্যাঙ্ক-রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে গড়ে ছয় শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সেটাও হবে কিনা তা নিয়ে এখন বাড়ছে চিন্তা। শুক্রবার প্রকাশিত সিএসও-র সরকারি তথ্য বলছে, চলতি অর্থবর্ষের ২য় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪.৫শতাংশ। গত অর্থবর্ষে ২য় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবর্ষের ১ম ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশ।
২০১২-১৩ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে শেষবার বৃদ্ধির হার তলানিতে নেমে দাঁড়িয়েছিল ৪.৩ শতাংশ। বিশ্ব অর্থনীতিতে ঢিমে গতি, রফতানি কম, দেশে নতুন লগ্নির অভাব, চাহিদার অভাব,ছাঁটাই এসবের জেরেই আর্থিক বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সিএসও-র তথ্য বলছে, ২য় ত্রৈমাসিকে, সাধারণ ব্যবসা, পরিবহণ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, আবাসনের মতো নানা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৪.৩ শতাংশ। কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ, খনিশিল্পে তা প্রায় শূন্য।
বৃদ্ধির বদলে চলতি অর্থবর্ষের ২য় ত্রৈমাসিকে উত্পাদন ক্ষেত্র ১ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। বিকাশ হার কমলেও গত বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন মন্দা মানতে তিনি নারাজ। বাজার চাঙ্গা করতে কর্পোরেট করে বড় ছাড়, ব্যাঙ্ক সংযুক্তি, আবাসন ক্ষেত্রকে সুবিধা দান -সহ একাধিক পদক্ষেপ করেছেন নির্মলা সীতারমন। কিন্তু তারপরও জিডিপি পতন রোখা যায়নি। কংগ্রেসের অভিযোগ, অসুখ সারছে না। কারণ সরকার অসুখ মানতেই চাইছে না।
সরকার অবশ্য বলছে, অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলি এখনও একইরকম শক্তিশালী। ৩য় ত্রৈমাসিক থেকেই আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়বে। সিএসও-র রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ৭ মাসেই রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০২.৪ শতাংশ। সরকারি খরচের চেয়ে কর আদায় বহুগুণ কম। ফলে চিন্তা আরও বাড়ছে।