সাংবিধানিক এক্তিয়ার থেকে বেরিয়ে রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন রাজ্যপাল। গোটা রাজ্যজুড়েই যখন এই অভিযোগ উঠছে, তখন বিধানসভায় সংবিধান দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনিও বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী, অধ্যক্ষ, রাজ্যপাল থেকে প্রধানমন্ত্রী— সব পদই আলাদা। রাষ্ট্রপতিও নির্বাচিত পদ। কিন্তু রাজ্যপাল নন। আমরা তাঁর যা যা অধিকার আছে, নিশ্চয়ই মানব। কিন্তু আজকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে? কেন এমন হবে? এটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল নয়।’ আর বৃহস্পতিবার নাম না করে ধনকড়ের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘রাজ্যপাল ২২০ বছর বাঁচুন। ওঁর পরিবার ভাল থাকুন, স্বর্ণচূড়ায় উঠুন। তিনি রাষ্ট্রপতি হোন, আমরা নিশ্চয়ই প্রার্থনা করব।’
মমতার কথায়, ‘আমি ২০১১ সাল থেকে কাজ করছি। কেশরীনাথ ত্রিপাঠীজির সঙ্গেও আমরা কাজ করেছি। তিনিও ওঁদের পছন্দেই এখানে এসেছিলেন। আমাদের দেখা হয়েছে। কিন্তু কখনও ঝগড়া হয়নি। আমরা মানিয়ে নিয়ে চলছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলে পরস্পরকে হাতজোড় করে নমস্কার জানাই। কেন্দ্রের সিপিএম নেতাদের সঙ্গে দেখা হলেও নমস্কার করি। এটা রাজনৈতিক সৌজন্য। এই যে মানুষটি এসেছেন, তিনি দীর্ঘজীবী হোন, তিনি রাষ্ট্রপতি হোন। বাংলার গণতন্ত্রে, রাজনীতিতে সৌজন্যের অভাবটা মানুষ ভালভাবে নেয় না।’
এরপরই রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘উনি একটু পাবলিসিটি ভালবাসেন। অনেকে ভাবেন, একদিন টিভিতে আমাকে না দেখালে আমার চাকরি চলে যাবে। এটা যাঁর যাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত। উনি আপনাদের কাছে বলে ফেলেছিলেন, উনি ভাইফোঁটায় আসতে চান আমার বাড়ি। তাই আপনাদের স্যাটিসফাই করার জন্য আমাকে চিঠি লিখেছিলেন। আমার এখানে সব কমিউনিটির মানুষকে নিয়ে ভাইফোঁটা পালন করি। সেই দিনটা আমি ওঁকে দিতে পারিনি। তাই ওঁর চিঠির জবাবে বলেছিলাম, আপনি চাইলে কালীপুজোয় আসতে পারেন। এটা ভদ্রতা। আমাদের বাংলার সংস্কৃতি।’ উল্লেখ্য, সংবিধান দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানেও সৌজন্যের রাজনীতির পাঠ দিয়েছিলেন মমতা। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘কোনও তিক্ততা নয়। কটূক্তিও নয়। তুমি অমানবিক হলে আমি মানবিক হব না কেন? আমাদের সংবিধান সেটাই শিখিয়েছে।’