বালা সাহেব ঠাকরে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকে শুরু করলেন তাঁর যোগ্য পুত্র উদ্ধব ঠাকরে। বাবার ছেড়ে যাওয়া কাজটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জন সমক্ষে গতকাল মুম্বইয়ের শিবাজি পার্ক ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করলেন। ঠাকরে পরিবারে এই প্রথম কেউ নেতৃত্ব দেবেন সরকারের।
শপথ ঘিরে তিন দলের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস অবশ্য সে সব প্রশ্নকে ঢেকে দিতে চেয়েছে। বিরাট ময়দানে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে শপথ নিয়েছেন উদ্ধব। মাঠ জুড়ে সেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের পতাকা। উদ্ধব ছাড়া শপথ নিয়েছেন ছয় মন্ত্রী। তিন দলের, দু’জন করে। বিধানসভায় শিবসেনার নেতা একনাথ শিন্দে, বালসাহেবের ঘনিষ্ঠ নেতা সুভাষ দেশাই মন্ত্রী হয়েছেন। এনসিপি থেকে শপথ নিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও পওয়ার পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতা জয়ন্ত পাটিল। শরদ পওয়ার মন্ত্রী করেছেন শিবসেনার দলত্যাগী নেতা এবং এক সময়ে সেখানে নম্বর-টু হিসেবে পরিচিত ছগন ভুজবলকে। সোনিয়া গান্ধীর দলের থেকে মন্ত্রী হয়েছেন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতি বালসাহেব থোরাট এবং কার্যকরী সভাপতি নিতিন রাউত।
এদিন ঐক্যের ছবি তুলে ধরতেই সক্রিয় ছিলেন সকলে। সন্ধে ৬টা ৪৩ মিনিটে উদ্ধবের শপথের আগে শিবাজি পার্কে পৌঁছন পওয়ার। তার আগেই শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে টুইট করেন, ‘আজকের দিনে প্রয়াত বালসাহেব আর মা সাহেবের কথা মনে পড়ছে….তাঁরা থাকলে ভাল হতো।’ সুপ্রিয়া লিখেছেন, ‘বালসাহেব আর তাঁর স্ত্রী মীনাতাই ঠাকরে আমাকে মেয়ের মতোই ভালবাসতেন। আমার জীবনে তাঁদের ভূমিকা চিরদিন মনে থাকবে।’
শিবাজি পার্কে দেখা গিয়েছে বালসাহেব ও ইন্দিরা গান্ধীর পাশাপাশি বসে থাকা ছবি। কংগ্রেসের কমল নাথ, কপিল সিব্বলেরা এসেছিলেন। তিক্ততা সরিয়ে রেখে শপথে পৌঁছন বালসাহেবের ভাইপো রাজ ঠাকরে। মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় জানান, তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে আমন্ত্রণ পাননি। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে ঠিক ছিল ১ তারিখে শপথ হবে। পরে ২৮ তারিখেই শপথের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিকই করেছেন ওঁরা। অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারেননি।’’ তবে এইদিন এই মঞ্চে দেখা যায়নি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
শপথে হাজির হয় অম্বানী পরিবার ও প্রথম সারির শিল্পপতিরা। উদ্ধবের জন্য অনেকটাই স্বস্তি এনে দিয়েছে গান্ধী পরিবার। তাঁকে চিঠি লিখেছেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। সনিয়া লিখেছেন, ‘রাজনীতি যখন বিষাক্ত হয়ে উঠেছে, সেই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে জোট হয়েছে মহারাষ্ট্রে।’ শপথের পরে মন্ত্রীসভার বৈঠকে বসেন উদ্ধব।