ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের ক্ষতিপূরণ দিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জন্য ২০৫কোটি ৬৭লক্ষ টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। আজ, বৃহস্পতিবার ২৮নভেম্বর থেকে প্রথম দফায় হলদিয়া- সহ জেলার কয়েকটি ব্লকে শিবির করে বুলবুল ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য চাষিদের ফর্ম বিলির কাজ শুরু হচ্ছে। বোরোচাষের আগেই দ্রুত ক্ষতিপূরণ দিতে এবার চেকের বদলে ব্যাঙ্কে আরটিজিএস পদ্ধতির মাধ্যমে চাষীদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো হবে।
জেলা কৃষিদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে আমন চাষে ৩১৯৯টি মৌজার মধ্যে ৩০১২টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। জেলার আমনে চাষে আড়াই লক্ষ হেক্টর জমির মধ্যে ১লক্ষ ৯১হাজার হেক্টর জমিকে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে কৃষিদপ্তর। ৯নভেম্বর বুলবুল সাইক্লোনের পর আমন, সব্জি, ফুল ও পানচাষে সবমিলিয়ে ৫৮৫কোটি ৩৫লক্ষ টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট দিয়েছিল জেলা কৃষিদফতর। ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি এবার ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষের খরিফ ও রবি, দুই মরশুমের অনুদানের চেক একসঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা কৃষিদফতর। জেলায় সাড়ে ৬লক্ষের উপর চাষীকে এই চেক দেওয়া হবে।
হলদিয়া ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা দেবায়ন চক্রবর্তী বলেন, ব্লক অফিসে বুলবুলের ক্ষতিপূরণের আবেদনের জন্য ফরম বিলি করা হবে। ফর্ম পূরণ করে চাষীরা সঙ্গে সঙ্গে তা জমাও দিতে পারবেন। ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে হলে ফর্মের সঙ্গে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, জমির রেকর্ড ও আইএফএস কোড সহ ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের জেরক্স কপি জমা দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের টাকা যাতে চাষীরা বোরো চাষের কাজে লাগাতে পারেন, সেজন্য দ্রুত টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। কারণ, আমন চাষে ক্ষতি ফলে চাষীদের নগদ টাকা পেতে সমস্যা হবে। বোরোর প্রস্তুতির জন্য এককালীন নগদ টাকার চাহিদা এখান থেকেই মিটবে।
জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা(শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা বলেন, বুলবুল ঝড়ের ক্ষতিপূরণ দ্রুত চাষীদের দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার রাতে জেলা কৃষিদফতরের কাছে রাজ্যের নির্দেশ এসেছে। জেলার জন্য ২০৫কোটি ৬৭লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য। বুলবুল ঝড়ে আমন চাষের ক্ষতি যাতে বোরো চাষে পুষিয়ে নিতে পারেন চাষীরা, সেজন্য তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দ্রুত টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে কৃষি দফতর। বোরোচাষ শুরু হওয়ার আগেই ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে।