টালা ট্যাঙ্কের সৌজন্যে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে অধিকাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ রয়েছে। তবে গ্রামাঞ্চলে এখনও সাধারণ মানুষকে টিউবওয়েলের জলেই নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়। তাই এবার গ্রামেও প্রতিটি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জলের সংযোগ দিতে উদ্যোগী হলো রাজ্য সরকার। এর জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস। তবে নবান্ন চায়, ২০২১ সালের মে মাসের আগেই বাড়ি বাড়ি ওই জল সরবরাহ করা হোক। তার জন্য নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এর জন্য রাজ্য ২০-২২টি বড় জলপ্রকল্প হাতে নিয়েছে। কিছু প্রকল্পের আর্থিক খরচ যেমন রাজ্য সরকারের, আবার কিছু প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য এসেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে।
প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদের এলাকায় জলের উৎস কী কী তা জানাতে হবে। তা পুকুর, নদী বা কুয়ো হোক, অথবা টিউবওয়েল। এর জন্য একটি সমীক্ষা করতে হবে। সেই সব জলের উৎসকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেই জল পান করা হয়, না বাসন ধোয়া বা স্নান করা হয়, তা সমীক্ষায় উল্লেখ করতে হবে। এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে একটি ‘ইউজার গ্রুপ’ তৈরি করতে বলা হয়েছে। যাঁরা সেই পুকুর, কুয়ো বা টিউবওয়েল ব্যবহার করেন, তাঁদের ওই গ্রুপে রাখতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতকে পরিস্রুত পানীয় জল ব্যবহারের দিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
বাংলার গ্রামীণ এলাকায় জল সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। পঞ্চায়েত দফতরের সহযোগিতায় গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের কাজ করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। ওই দফতরের অধীনে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, নন্দীগ্রাম, ভাঙড়-রাজারহাট, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিংয়ে বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় ছোট-মাঝারি জল প্রকল্পের কাজও হাতে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। তবে সেই কাজ কবে শেষ হবে, তা এখনও জানা যায়নি।
সেই সব কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি সেই অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, তাঁর কাছে খবর আছে, পাইপ কিনে রেখে ফেলে রাখা হচ্ছে। অথচ প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে না। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা বাদে কোনও প্রকল্পের কাজের জন্য জমি নিয়ে অসুবিধা নেই বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে বলে নবান্ন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ২০২১ এর ডিসেম্বর।