মহারাষ্ট্রে দিন কয়েক ধরে চলা ‘মহা’-নাটকের অন্যতম রচয়িতা তিনিই। একা অজিত পাওয়ারের ‘বিশ্বাসঘাতকার’ জেরেই সরকার গঠন নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল সে রাজ্যে। তবে শেষমেশ সেই ফডনবিশ সরকারের কফিনে শেষ পেরেক পুঁততে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছেন সেই অজিতই। গতকাল উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দেওয়ার পরই তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছিল ‘ঘর ওয়াপসি’র জল্পনা। বুধবার দেখা গেল, খেলা ঘুরিয়ে কাকার ঘরেই ফিরে এসেছেন শরদ-ভাইপো। জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি দল ছাড়িনি। আমি এনসিপির সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং আগামী দিনেও থাকব।’ অন্যদিকে, ভাইপো ঘরে ফিরতে তাঁকে ভালবেসে আপন করে নিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি কাকা শরদ পাওয়ার। ফিরিয়ে দিয়েছে তাঁর পুরানো পদও।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অজিত জানালেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যম আমার নামে মিথ্যা খবর ছড়িয়েছে। আর এটাই সময় তার জবাব দেওয়ার। আমি দল ছাড়িনি। আমি বরাবর এনসিপির সঙ্গে ছিলাম, আছি, এবং আগামী দিনেও থাকব।’ তবে অজিত পাওয়ারের এই অল্প দিনের মতিভ্রমের পিছনে কিন্তু অন্য আঙ্গিক খুঁজে পাচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা। রাজনৈতিক মহলের দাবি, মহারাষ্ট্রে ৭০ হাজার কোটির সেচ দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে ইডি সিবিআইয়ের চাপে কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছিল অজিত পাওয়ারের। জুজু দেখানোর মতো মাঝে মধ্যে অজিতকে ইডি-সিবিআই দেখাচ্ছিল বিজেপি। তাই মোক্ষম সুযোগটা আর হাতছাড়া করেনি এনসিপি।
রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি এনসিপির ঘনিষ্ঠ মহলেরও দাবি, শরদ পাওয়ার সবটাই জানতেন এবং বিজেপির সঙ্গ দেওয়ার নামে অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে চলা গুরুতর ১২ টি মামলার মধ্যে বিজেপির সৌজন্যে ৯ টি মামলায় নিষ্কৃতি মিলতেই পাশি উল্টে দিয়েছেন তিনি। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের তরফে আস্থাভোটের নির্দেশ আসার পর সুযোগ বুঝে নিজের ইস্তফা পত্র পেশ করে দেন অজিত। আর ক্ষমতার রাশ হাত থেকে বেরিয়ে গেছে বুঝতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন ফডনবিশও। এরপরই সোজা কাকা শরদ পাওয়ারের দোরে হাজির হন অজিত। ‘ভুল-ত্রুটি’ মাফ করে ভাইপোকে ফের কাছেও টেনে নেন শরদ। বুধবার সকালে বিধানভবনের প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে যখন সব বিধায়কদের শুভেচ্ছা জানান শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে, তখন তুতো ভাই অজিতকে আলিঙ্গন করেও অভিবাদন জানাতে ভোলেননি তিনি। এর থেকেই স্পষ্ট, এনসিপির মধ্যে আর কোনও দ্বন্দ্ব নেই।