বাংলাদেশ সিরিজ শেষ হলেই ভারতে পৌঁছে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। ডিসেম্বরে বিরাট কোহলিদের বিরুদ্ধে তিনটি টি-টোয়েন্টি এবং তিনটি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলবে ক্যাবিবিয়ান ব্রিগেড। সীমিত ওভারের সেই সিরিজের জন্য বৃহস্পতিবার ঘোষিত হবে ভারতের দল। সম্ভবত এটাই হতে চলেছে এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক মণ্ডলীর শেষ দল নির্বাচনী সভা।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে। কারণ টানা খেলে যাওয়ার ধকলের কথা জানিয়েছিলেন নির্বাচকরা। সেই একই ‘ওয়ার্কলোড’-এর যুক্তিতেই এবার রোহিতকেও বিশ্রামে পাঠানোর ভাবনা। চলতি বছরে রোহিতও ক্রমাগত খেলে চলেছেন। আইপিএলে ১৬টি ম্যাচ খেলে উঠেই সটান উড়ে গিয়েছেন বিশ্বকাপে খেলতে। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত খেলেছেন চারটি টেস্ট এবং প্রায় এক ডজন ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। নতুন বছরে নিউজিল্যান্ড সফরে রওনা হওয়ার ‘হিটম্যান’কে সেরা কন্ডিশনে পাওয়ার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে তাঁকে বিশ্রাম দিয়ে চাইছেন নির্বাচকরা।
উল্লেখ্য মুখ হতে পারেন মায়াঙ্ক। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঘরের মাঠে ২০২৩ বিশ্বকাপের জন্যও মায়াঙ্ককে তৈরি করতে চায় ইন্ডিয়ান থিঙ্কট্যাঙ্ক। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার দীপ দাশগুপ্ত এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে তৈরি রাখলে নির্বাচকদের কাছে অপশন অবশ্যই বাড়বে। সাদা বলের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দে স্ট্রোক নিতে পারে ও। আশা করি, টেস্টের পাশাপাশি একদিনের ক্রিকেটেও মায়াঙ্ক সফল হবে। ওর প্রতিভা নিয়ে কারও মনে সংশয় থাকার কথা নয়। ড্রাইভ, কাট, পুল, সুইপ– সব ধরনের স্ট্রোকই ও নিতে পারদর্শী। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে সবাই তা দেখেওছে।’১০টি টেস্টে খেলার আগেই দু’টি ডাবল সেঞ্চুরি করে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। সুযোগ পেলে এই ধারাবাহিকতা সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও মেলে ধরাই তাঁর লক্ষ্য। ইন্দোরে ২৪৩ রানের লম্বা ইনিংসে তাঁর আটটি বিশাল ছক্কা মন ভরিয়েছে হোলকার স্টেডিয়ামে উপস্থিত ক্রিকেটপ্রেমীদের। স্বাভাবিক স্ট্রোক প্লেয়ার মায়াঙ্ককে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কাজে লাগানোর ব্যাপারে তাই উৎসাহী নির্বাচকরা।
বিশ্বকাপে শিখর ধাওয়ান চোট পাওয়ায় ব্যাক-আপ হিসেবে মায়াঙ্ককে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু একটি ম্যাচেও খেলার সুযোগ পাননি তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মায়াঙ্কের প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইন্দোরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধ্রুপদী দ্বিশতরানে বিশেষজ্ঞদের চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনি। ৩৩০ বলে ২৪৩ রান করার পথে ২৮টি বাউন্ডারি এবং ৮টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন মায়াঙ্ক। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের বোলারদের বিন্দুমাত্র রেয়াত না করেই মেলে ধরেছেন স্বাভাবিক পারফরম্যান্স। তরুণ ওপেনারটির আক্রমণাত্মক এই ইনিংসে মুগ্ধ ভারতীয় নির্বাচকরাও। ঘরোয়া ক্রিকেটেও বেঙ্গালুরুর এই ব্যাটসম্যানটির পারফরম্যান্স যথেষ্ট উজ্জ্বল। এছাড়া শিখর ধাওয়ানের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্স যদি চলতে থাকে, তাহলে মায়াঙ্কের উপস্থিতি নির্বাচকদের কাছে দ্বিতীয় ব্যাক-আপ হতেই পারে। তবে এই ব্যাপারে প্রথম ব্যাক-আপ অবশ্যই লোকেশ রাহুল।