সম্প্রতি এলাহাবাদ, ফৈজাবাদের, মুঘলসরাই স্টেশনের নাম পাল্টে দেওয়ার পর এবার আগ্রার নাম বদল করতে চাইছে উত্তরপ্রদেশের যোগীর সরকার। তাঁদের দাবি, ঐতিহাসিক আগ্রার নতুন নাম হোক অগ্রবন। এটাই নাকি এককালে আগ্রার নাম ছিল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগকে এই নামের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনার জন্যে অনুরোধ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।
আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষকরা অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘অগ্রবন’ নামটির কোনও ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। আগ্রার আগের নাম অগ্রবন ছিল বলে ইতিহাসে কোথাও উল্লেখ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি আগ্রা জেলা প্রশাসনও জানিয়ে দিয়েছে, অগ্রবন নামের কোনও ইতিহাস এখনও অবধি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নাম বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য তার আগে থেকেই সরব হয় নেটিজেনদের একাংশ। কোনও ঐতিহাসিক জায়গার নাম এভাবে বদলানো যায় না বলেই জানান তাঁরা। সেই সুরে সুর মিলিয়েই টুইট করলেন অপর্ণা সেন। তিনি লিখেছেন, “গুজব শুনছি আগ্রার নাম নাকি বদল করা হবে! আশা করি এটা গুজবই, সত্যি নয়। কে এই সিদ্ধান্ত নিলেন? আমরা দেশের করদাতা নাগরিক, আমাদের মত না নিয়ে এমনটা কী ভাবে করা যায়? আমরা মোটেও আগ্রার নাম বদলে অন্য কোনও কিছু করতে দেব না।”
আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান সুগম আনন্দ জানিয়েছেন, যোগী সরকারের আবেদন খতিয়ে দেখার পরে ইতিহাসে এমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি, যে ঠিক কোন সময় থেকে এই জায়গাটির নাম বদলে আগ্রা করা হয়েছিল। আগ্রা নাম যে পরিবর্তিত, সেটারও কোনও তথ্য মেলেনি কোথাও।
তবে মুঘল সম্রাট আকবরের সময়ে জায়গাটিকে আকবরবাদ বলে ডাকা হতো বলে জানা যায়। সেই সূত্র ধরেই আগ্রার কিছু উর্দুভাষী কবিদের ‘আকবরবাদী’ নামে ডাকা হয় এখনও। তবে সেটা সেই জায়গার নাম নয়। জায়গার নাম আগ্রাই, আকবরের পরিচিতিতে তাকে ভূষিত করা হয়েছিল দ্বিতীয় নামে। ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দে সিকন্দর লোধি ভারতে আসার আগেও জায়গাটির নাম আগ্রাই ছিল।