অধিবেশনের প্রথম দিনই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনতে পারে মোদী সরকার। এ নিয়ে আগে থেকেই তুলকালাম হওয়ার সম্ভাবনা ছিলই। এমনকী অধিবেশন শুরুর আগেই তা মুলতুবি করার জন্য প্রস্তাবের নোটিশও দিয়ে রেখেছিল কংগ্রেস ও শিবসেনা। অবশেষে আজ, সোমবার থেকে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতেই দেখা গেল প্রত্যাশা মতোই শোরগোল পড়ে গেল সংসদে।
এদিন অধিবেশনের শুরুতেই সদ্য প্রাক্তন সাংসদ রাজ জেঠমালানি, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলির, গুরুদাস দাশগুপ্ত, জগন্নাথ মিশ্র, সুখদেব সিং লিব্রার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু। আর তারপর অধিবেশনের শুরুতেই জম্মু-কাশ্মীরের বিঘ্নিত পরিষেবা এবং ফারুক আবদুল্লার গৃহবন্দী দশা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস। ভারী বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনে শিবসেনা। তারপর প্রশোত্তর পর্ব চলাকালীন বিরোধীরা জম্মু-কাশ্মীর সহ বিভিন্ন ইস্যুতে স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রসঙ্গত, এদিন সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘আমরা চাই যেন প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা হয়। ভালো থেকে আরও ভালো বিতর্ক হওয়াও আবশ্যক। কোনও বিবাদ হোক বা সংবাদ হোক, প্রত্যেক সাংসদ যাতে নিজের বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করতে পারেন এবং সংসদের আলোচনাকে আরও সমৃদ্ধ করেন সেই আশা করছি।’ তবে প্রধানমন্ত্রী সুস্থ আলোচনা চাইলেও এবারের অধিবেশনে তা কতটুকু সম্ভব হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলের।
কেননা একদিকে তো নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রস্তাব রয়েইছে। অন্যদিকে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে ইস্যুতে সরকারকে কাঠগড়ায় তুলবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন বিরোধীরা। শুধু তাই নয়, কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পর তিন মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও নিষেধাজ্ঞা কেন প্রত্যাহার করা হল না এই নিয়েও প্রশ্ন ওঠা অবশ্যম্ভাবী ছিল। অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে মহারাষ্ট্রের চাষিদের ফসল নষ্ট হয়েছে, এর প্রতিবাদে অধিবেশন মুলতুবি করার আগাম প্রস্তাবের নোটিশ দিয়ে রেখেছিল শিবসেনা। অর্থাৎ, পূর্ব পরিকল্পনা মতোই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে দেখা গেল বিরোধীদের। তবে এই শোরগোলের মধ্যেই অধিবেশন চালান স্পিকার।