প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে গত আগস্ট মাস থেকেই চালু হয়েছিল ‘দিদিকে বলো’। যেই ফোন নম্বরে সরাসরি অভিযোগ জানানো বা পরামর্শ দেওয়ার উপায় ছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। শনিবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ‘দিদিকে বলো’ নিয়ে নতুন করে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের। আর মেয়রের কাছ থেকে নির্দেশ মেলার পর রবিবার সকাল থেকেই ময়দানে নেমে পড়েন কলকাতা পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু সেন ও উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।
রাজা মণীন্দ্র রোড সংলগ্ন জেকে মিত্র রোডের পার্কে ফুটবল খেলছিল পাড়ার ছেলেরা। সাংসদ ও কাউন্সিলর চিকিৎসক শান্তনু সেনকে দেখে তাঁরা খেলা থামিয়ে দিল। শান্তনু ছেলেদের বললেন, ‘তোমাদের কোনও অসুবিধা হলে ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন কোরো।’ এই বলে তিনি ‘দিদিকে বলো’র কার্ডও তুলে দিলেন ছেলেদের হাতে। ওই ছেলেরা কাউন্সিলরকে জানালেন, এখন তাঁদের কোনও সমস্যা নেই। তবে মুশকিল আসানের প্রয়োজন হলে অবশ্যই ওই নম্বরে ফোন করবেন।
রাজা মণীন্দ্র রোডের বাসিন্দা জয়ন্ত ঘোষ কাউন্সিলর শান্তনু সেনকে দেখে বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনে জলের পাইপলাইন এখনও জোড়া হয়নি। নিকাশি লাইনের পাইপও বসে গিয়েছে।’ শান্তনু তাঁর হাতে ‘দিদিকে বলো’র কার্ড তুলে দেন। বলেন, ‘বাড়ির সামনের সমস্যাটা আমি সমাধান করে দেব। আপনাদের কোনও প্রয়োজন বা সমস্যা হলে দিদিকে বলোতে জানাবেন।’ গতকাল দু’জনেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এলাকার দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই রাত কাটান।
অন্যদিকে, মতিলাল নেহরু রোডের বস্তিতেই পা দিতে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকে দেখে এগিয়ে আসেন বাসিন্দারা। এক বাসিন্দা এগিয়ে এসে বলেন, ‘অনেক দিন ধরে আমার বাচ্চা দুটো অসুস্থ। কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছি না।’ দেবাশিসের আশ্বাস, ‘ঠিক আছে ব্যবস্থা হবে।’ এই বলে তিনি বাসিন্দাদের হাতে ‘দিদিকে বলো’র কার্ড তুলে দেন। তার পরে বলেন, ‘আপনাদের সমস্যা সুরাহার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই নম্বরে ফোন করে জানাতে পারেন। এ দিন দেবাশিস মনোহরপুকুর সেকেন্ড লেনেও যান। দুই এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে রাতে পাড়ায় বেআইনি ভাবে ট্যাক্সি রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন। ধোঁয়ায় রোজ সকালে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। মেয়র পারিষদ তাঁদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। সবমিলিয়ে মেয়রের নির্দেশে তৎপরতার সঙ্গে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে উঠেপড়ে লেগেছেন কাউন্সিলররা।