সাধারণ মানুষের জিনিসপত্র কেনাকাটার ক্ষমতা কমে দাঁড়াল চার দশকে সর্বনিম্ন। এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে একটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের মর্যাদা ক্ষুন্ন হতে পারে এই আশঙ্কায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সংক্রান্ত ২০১৭-১৮ সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করেনি ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস।
ওই সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গ্রামাঞ্চলে নিত্যপণ্যের কেনাকাটার হার ৮.৮ শতাংশ কমেছে। বলা হয়েছে খাদ্য, শিক্ষা এবং পরিচ্ছদ তিনটি ক্ষেত্রেই খরচের পরিমাণ কমিয়েছেন গ্রামের মানুষ। অবস্থা এমন দানাশস্যে কেনায় কমিয়েছে ২০ শতাংশ।
সংবাদমাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরে কেন্দ্র জানিয়ে দিল, অনেক খামতি থাকায় এই সমীক্ষা খারিজ করা হয়েছে। এই প্রথম জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর (এনএসও)-এর কোনও পরিসংখ্যান খারিজ করল কেন্দ্রীয় সরকার। পরিসংখ্যান মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, আগামী দু’বছর এই সমীক্ষা চালানো যুক্তিযুক্ত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেটা হলে ২০২২ সালের আগে দারিদ্র সংক্রান্ত কোনও তথ্যই মিলবে না। তবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ কবুল করেছেন, ‘অর্থনীতির ঝিমুনি পিছনে চলে গিয়েছে, তা এখনই বলাটা তাড়াহুড়ো হয়ে যাবে।’
অর্থনীতিবিদদের মতে, সমীক্ষা সঠিক হলে দেশের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ এখন দারিদ্রসীমার নীচে। দরিদ্র মানুষের হার অন্তত ১০ শতাংশ বিন্দু বেড়েছে। এনএসও-র সমীক্ষা বলছে, ২০১৭-১৮ সালে মাথাপিছু মাসিক খরচ ২০১১-১২ সালের তুলনায় প্রকৃত অর্থে (অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধি গণ্য করার পরে) ৫৫ টাকা কমেছে। সামগ্রিক ভাবে খরচ কমার হার ৩.৭ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে ৮.৮ শতাংশ। জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পি সি মোহননের মতে, মাসিক খরচ কমে যাওয়ার অর্থ, দারিদ্র বেড়েছে। ধনীরা সংসার খরচ কমাবেন, এমনটা সাধারণত হয় না। আয়ের দিক থেকে নীচের সারিতে থাকা ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষই খরচ কাটছাঁট করেন।