বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে। চাপের মুখে কেন্দ্র এখন পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করলেও তার সুফল এখনও পর্যন্ত দেখতে পায়নি অর্থনীতি। উল্টে একের পর এক পরিসংখ্যান ক্রমাগত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে যাচ্ছে, কমে যাওয়া তো অনেক দূরের কথা, দিনকে দিন যেন আরও জাঁকিয়ে বসছে অর্থনীতির ‘অসুখ’। এই অবস্থায় আবারও ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’র ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এবার ৫ দেশের (ভারত, চিন, ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা) ব্রিকস মঞ্চে ফের পাঁচ বছরে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার স্বপ্ন ফেরি করলেন তিনি। ডাক দিলেন, বাণিজ্য বাড়াতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য স্থির করার। যা দেখে বিশেষজ্ঞদের একাংশের প্রশ্ন, ভারতের বৃদ্ধি নিয়ে যে ইঙ্গিত মিলছে, তাতে ২০২৪ সালের মধ্যে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি কী ভাবে হওয়া সম্ভব, তা স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া, চিনের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারত টক্কর দিতে কতটা তৈরি, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। বিশেষত যেখানে মূলত সস্তার চিনা পণ্যে বাজার ছেয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ১৬ দেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আরসিইপি থেকে সরে এসেছে দিল্লী।
২০১৮ সালে অর্থনীতি ছিল ২.৬ লক্ষ কোটি ডলারের। তাকেই ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নেওয়ার পণ করেছে কেন্দ্র। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কটাক্ষ ছিল, চলতি বছরের দামের ভিত্তিতে হিসেব করা বৃদ্ধি ১১-১২ শতাংশের আশেপাশে থাকলে ওই লক্ষ্য ছোঁয়া সম্ভব। এর জন্য সরকারের কেরামতি লাগে না। কিন্তু সম্প্রতি গোত্তা খেয়ে ৫ শতাংশে নেমেছে প্রথম ত্রৈমাসিকের বৃদ্ধির হার। কিছু পূর্বাভাস বলছে, ভবিষ্যতে তা আরও নিম্নমুখী হতে পারে। ফলে সরকার কীভাবে ওই ‘পাঁচ লাখি লক্ষ্য’ ছোঁবে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।