বিধ্বংসী বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সুন্দরবন জুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ধানচাষে। মাথায় হাত চাষিদের। সুন্দরবনে বর্ষাকালেই একফসলি আমন ধানের চাষ হয়। এই সময়ে চাষের জন্যই কৃষকরা সারাবছর মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু এবার বুলবুলের প্রভাবে যে বিপর্যয়টা হল তা চাষিদের জন্য অনেক।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কৃষকরা চড়া সুদে ঋণ নিয়েই চাষ করেন। এ বার ধান নষ্টের জেরে সেই ঋণ কী করে শোধ হবে তা ভেবে উঠতে পারছেন না কৃষকরা।
গোসাবা,বাসন্তী, কুলতলি ও ক্যানিং-১ ব্লকে আমন ধানের চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত ঘরে ঘরে ত্রান বিলি করে দুর্গতদের কিছুটা স্বস্তি দিতে জোর তৎপরতা প্রশাসনে। কুলতলি ব্লক কৃষিদফতরের হিসেব অনুযায়ী, ক্ষতি হয়েছে ২১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ধান। কুলতলির পরেই গোসাবা ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কার্যত মাথায় হাত কৃষকদের। এখানে ক্ষতি ১২ হাজার ৪৫ হেক্টর জমির ধান। একই অবস্থা বাসন্তী ব্লকের। এখানে ৪৫৬৩ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।
ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে জেলা প্রশাসনে। শুধু গোসাবাতেই ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা দু’লক্ষ লক্ষ ৪৪ হাজারের বেশি। জেলা প্রশাসনের তরফে শুধু গোসাবার জন্য বুধবারই ১২ হাজার ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। এ দিন গোসাবার বিডিও অফিসে ত্রিপল, বারো কেজি চাল, বিস্কুট দেওয়া হয়। আর শাড়ি, লুঙ্গি, কম্বল, চাদর দুর্গতদের হাতে তুলে দেন গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর ও ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক বন্দনা পোখরিওয়াল। গোসাবার মতো একই অবস্থা কুলতলি, ক্যানিং, বাসন্তীর। সেখানে ত্রাণের কাজে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে।
বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে একদিকে যেমন মাথাগোঁজার আস্তানা খুইয়েছেন অনেকে তেমনই মাঠের ধান মাঠেই পচতে বসায় মাথায় হাত চাষিদের। এক মাসের মধ্যে বাজারে নতুন ধান আসার কথা কিন্তু তার দাম আকাশছোঁয়ার আশঙ্কা।