অবসান হল না শবরীমালা বিতর্কের। বিতর্ক ঝুলেই রইল সুপ্রিম কোর্টে। ৫ বিচারপতির বেঞ্চ থেকে মামলাটি পাঠানো হল ৭ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে গঠিত ৫ বিচারপতির মধ্যে ৩ বিচারপতি মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর পক্ষে মত পোষণ করেন। আর তারপরই মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে, এখনও পর্যন্ত অমীমাংসিত থেকে গেল মেয়েদের মন্দিরে প্রবেশের বিষয়টি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছে। শীর্ষ আদালত কী রায় দেয় এ দিন তার দিকে তাকিয়েছিল গোটা দেশই।
আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। গত বছরের শবরীমালার মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, সেই রায় পুনরায় বিবেচনা করা হবে কিনা, তা নিয়ে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের ২ জন বিচারপতি ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিন বিচারপতি পুনর্বিবেচনার পক্ষে কথা বলেন। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই মামলায় আরও অনেকগুলি বিষয় খতিয়ে দেখা বাকি আছে। তাই শবরীমালার মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হল সাত জন বিচারপতির বেঞ্চে। ওই সাত সদস্যের বেঞ্চেই পুনরায় মামলার শুনানি চলবে। একই সঙ্গে মন্দিরে মুসলিম এবং পার্সি মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টের মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, এম খানউইলকর, ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং ইন্দু মলহোত্রার ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে জানিয়েছিল শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সী মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। এই রায়ের বিচারপতিদের সমর্থন দাঁড়িয়েছিল ৪:১।
শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ সম্পূর্ণ ধার্মিক দিক, কোর্টের সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ উচিত নয় বলে এই রায়ের বিপক্ষে মতপ্রকাশ করেন বিচারপতি ইন্দু মলহোত্রা। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিরিখে পাশ হয়ে যায় এই রায়। এই রায়ের আগে পর্যন্ত চির কিশোর দেবতা আয়াপ্পার মন্দিরে দশ থেকে পঞ্চাশ বছরের ঋতুমতী মহিলারা প্রবেশ করতে পারতেন না।
ধর্মীয় আচারের অনেক উর্ধ্বে উঠে নারী-পুরুষের সমানাধিকারেই শিলমোহর দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পুরনো প্রথা ভেঙে শবরীমালার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল মহিলাদের জন্য। তারপরেই এই রায় পুনরায় বিবেচনার করার জন্য ৫০টি আর্জি জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। আজকের রায়ে , এই মামলা সাত বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হল। এই মামলা এখনও অমীমাংসিত। তবে, যতদিন না এই মামলার মীমাংসা হচ্ছে ততদিন পুরনো রায়ই বহাল থাকবে।