মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সময় ছিল সরকার গঠনের। এই সময়ের মধ্যেই সরকার গঠনের দাবি জানাতে হত এনসিপিকে। কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক বাকি থাকতেই মহারাষ্ট্রে জারি হয়ে যায় রাষ্ট্রপতি শাসন। সব পক্ষকে সুযোগ না দিয়ে সাত তাড়াতাড়ি এই সিদ্ধান্তের জন্য এবার কেন্দ্রীয় সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের মতে, কোনও নিয়ম-নীতি না মেনে সরাসরি ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর আঘাত হেনেছে মোদী সরকার। আবার, রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে শিবসেনা। উদ্ধব ঠাকরের অভিযোগ, সরকার গঠনের জন্য বিজেপিকে তিন দিন সময় দিলেও তাঁদের মাত্র ২৪ ঘণ্টা দেওয়া হয়।
এমনই চরম টানাপোড়েনের মধ্যে এখন লাখ টাকার প্রশ্ন হল, এর পর কী হবে? ফের ভোটের দিকে এগবে মহারাষ্ট্র, নাকি কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়বে শিবসেনা-এনসিপি। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সেই সম্ভাবনা এখনও ম্লান হয়ে যায়নি। যদি কংগ্রেসের সমর্থনপত্র রাজভবনে এসে পৌঁছয়, তাহলে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের অভিনব জোট সরকার দেখবে মহারাষ্ট্রবাসী। তাই সব নজর এখন কংগ্রেসের দিকে। উল্লেখ্য, প্রথমে নীতিগতভাবে শিবসেনা-এনসিপির সরকারকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত জানালেও সমর্থনপত্র দেয়নি কংগ্রেস। কারণ, দলের অন্দরে প্রবল টানাপোড়েন। দফায় দফায় বৈঠক, আলোচনা-পর্যালোচনা করেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কংগ্রেস। মূলত কয়েকটি প্রশ্নে আটকে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রথমত, চরম হিন্দুত্ববাদী শিবসেনার বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রে এতদিন লড়াই করেছে কংগ্রেস। এখন সেই শিবসেনাকে সমর্থন করলে দলের ভবিষ্যৎ কতটা প্রশ্নের মুখে পড়বে, ভাবাচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্বকে। আগামী দিনে একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে কী জবাব দেবে কংগ্রেস। বিশেষ করে কেরালার মতো রাজ্যে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হবে তাদের। দ্বিতীয়ত, শিবসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়লেও তা পাঁচ বছর পর্যন্ত টিকবে কি না, সেই প্রশ্নও রয়েছে দলের অন্দরে। আবার সরকারে গেলে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচী কী হবে? বিভিন্ন সরকারি সিদ্ধান্তে শিবসেনার সঙ্গে কতটা সহমত হওয়া সম্ভব হবে? এই সব একাধিক প্রশ্নে জর্জরিত কংগ্রেস নেতৃত্ব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।