বিদেশ বিভুঁইয়ে এক বঙ্গতনয়ার স্কোয়াশে সেরা হওয়ার কীর্তি। সর্বাণী মৈত্র। বয়স মাত্র ১১। কিন্তু এই বয়সেই অস্ট্রেলিয়ায় স্কোয়াশে চ্যাম্পিয়ন। কুইন্সল্যান্ড ২০১৯ স্কোয়াশ জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপেও বিজয়িনী। স্কটিশ জুনিয়র ওপেনে (২০১৮) রানার আপ। প্রতিনিধিত্ব করেছে ব্রিসবেন ভাইপার্স স্কোয়াশেও। এ মেয়ে সাঁতার কাটে। হাই জাম্প, লং জাম্পে পদক জেতে। স্কোয়াশে চ্যাম্পিয়ন হয়। ছবি আঁকে, গান গায়, বাঁশিও বাজায়। পড়াশোনাতেও প্রথম।
বাঙালি মেয়ে লেখাপড়া করে। ঘরকন্যা করে। স্কোয়াশ খেলবে সে আবার কী? খেলাটা যে ঠিক কী, সেটাই তো বাঙালি গৃহস্থের সংসারে দুর্বোধ্য। তবে যাঁরা একটু–আধটু খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা জানেন বঙ্গসন্তান স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়ন সৌরভ ঘোষালের নাম। কিন্তু বাঙালি বাড়ির মেয়ে স্কোয়াশ খেলার উৎসাহ পেল কোথায়??
সর্বাণীর বাবা সুজয় জানান, “আমি মাইনিং ইন্ডাস্ট্রিতে আছি। নিজেকে ফিট রাখতে স্কোয়াশ খেলি। আমাকে দেখেই মেয়ে স্কোয়াশে আগ্রহী হয়। ও খেলাটা ভালবাসছে দেখে এখন স্কোয়াশ কোর্টও বানিয়েছি। সেখানে রবিন প্রেন্টিসের কাছে ও ট্রেনিং নেয় সপ্তাহে ৬ দিন। গত বছর পর্যন্ত বিশ্বের দ্বিতীয় নম্বরে থাকা জেনিও মেয়েকে মাঝেমধ্যে ট্রেনিং দেন”। তিনি আরোও বলেন, “আমরা এখন ব্রিসবেনে থাকি। সর্বাণীর জন্ম অস্ট্রেলিয়াতেই। কিন্তু আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই মাস পাঁচেক বয়সে সর্বাণীকে আমরা কলকাতায় রেখে গিয়েছিলাম দাদু–দিদার কাছে। বছর তিনেক ও এই শহরেই ছিল। তারপর ওকে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যাই”। খেলাধুলো সুজয়ের বরাবর প্রিয়। ফলে তাঁর মেয়ে প্রথমে শিখতে শুরু করে সাঁতার। ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করে ইতিমধ্যেই প্রায় দেড়শো পদক জিতেছে। গত দু’বছর সাঁতারে জেলা স্তরে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে।
তবে বিদেশে থেকে বাংলার সংস্কৃতি ভোলেনি সে। শুধু ঝরঝরে বাংলায় কথা বলা নয়, ছোট্ট সর্বাণী বাঙালি ঐতিহ্য, সংস্কৃতির সঙ্গেও যথেষ্ট পরিচিত। দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় মজা করে। এবার কমিউনিটি প্রোগ্রামে বাঁশি বাজিয়ে তাক লাগিয়েছে। তার সবচেয়ে ফেবারিট অনুষ্ঠান ভাইফোঁটা।