আতিশ তাসিরের ওসিআই (ওভারসিজ সিটিজেনস অফ ইন্ডিয়া) বাতিল করে দিল মোদী সরকার। প্রশ্ন উঠছে, ভারতের ‘ডিভাইডার ইন চিফ’— লোকসভা নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে লেখা টাইম ম্যাগাজিনের এই কভার স্টোরিই কি কাল হল আতিস তাসিরের?
দেশের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিকরা এই ‘ওভারসিজ ইন্ডিয়ান সিটিজেন’ বা ওসিআই কার্ড পাওয়ার যোগ্য। এ ছাড়া প্রায় একই রকম আইন ছিল ‘পার্সন অব ইন্ডিয়ান অরিজিন’-এর ক্ষেত্রে। ২০১৫ সালে এই দু’টির সংযুক্তিকরণ করে কেন্দ্র। সেই আইনেই ২০১৫ পর্যন্ত ওসিআই এবং তার পর থেকে পিআইও কার্ড ছিল আতিশের। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তাঁর সেই অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার পরেই নানা মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এ বছরের লোকসভার ভোটগ্রহণ শেষে এবং ফল ঘোষণার আগে টাইম ম্যাগাজিনের আন্তর্জাতিক সংস্করণের কভার স্টোরি ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে। আতিশ তাসিরের ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ভারতের ‘ডিভাইডার ইন চিফ’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র আগে কখনও এতটা বিভক্ত হয়নি। তার মধ্যে গণপিটুনি, উত্তরপ্রদেশের কুর্সিতে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যোগী আদিত্যনাথকে বসানো, মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞাকে প্রার্থী করার মতো বিজেপির একাধিক সিদ্ধান্তের সমালোচনাও ছিল। এই প্রশ্নও তোলা হয়েছিল, ভারত কি আরও পাঁচ বছর এই সরকারকে সহ্য করতে পারবে?
সেই সময়ই বিজেপি এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। নরেন্দ্র মোদীকে বদনাম করতেই এই ধরনের প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন দলের নেতারা। লেখকের পাকিস্তানি যোগ তুলে তাঁদের বক্তব্য ছিল, এর পিছনে ‘পাকিস্তানের অ্যাজেন্ডা’ কাজ করেছে। পরে মোদীও বলেছিলেন, টাইম ম্যাগাজিন বিদেশি। লেখকও তাঁর পাকিস্তানি ব্যবসায়ী পরিবারের যোগের কথা স্বীকার করেছেন। লেখকের বিশ্বাসযোগ্যতা কতটা, এটাই তার প্রমাণ।
এ বার সেই আতিশের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, ওই প্রতিবেদনের খেসারতই আতিশকে দিতে হল কি না। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্য, এটি পুরোপুরি ভুল ব্যাখ্যা। এর কোনও ভিত্তি নেই। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামেনি। কংগ্রেস নেতা শশী তারুর তোপ দেগেছেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। লেখকের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর টুইট, ‘সরকারি মুখপাত্র মিথ্যে কথা বলছেন, এটা বেদনাদায়ক।’