কালনার ‘সুখসাগর’ প্রজাতির পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষকদের আনন্দের অন্ত ছিল না। কারণ এ বছর গুণমানে সেরা এখানকার পেঁয়াজ শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ–সহ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিভিন্ন দেশে রপ্তানির সুযোগ মিলেছে কিন্তু সেই আনন্দে বাধ সেধেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্ত। মোদী সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
রপ্তানির বরাত অনুযায়ী পেঁয়াজ চাষ শুরুও হয়ে গিয়েছে কালনা মহকুমার নানা প্রান্তে। কিন্তু এই আয়োজনে বাদ সাধছে পেঁয়াজ ওঠার সময় পর্যন্ত যদি এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে, তাতে পেঁয়াজ চাষিদের আশায় বাড়া ভাতে ছাই পড়ার আশঙ্কা।
কালনার পেঁয়াজের উন্নত গুণমানের জন্য পেঁয়াজ ওঠার সময় এ রাজ্য তো বটেই, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে ফড়ের দল হাজির হয়ে যান। কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেল, ভাল দর হচ্ছে কেজি প্রতি ৯/১০ টাকা। কোনও কোনও বছর ৩/৪ টাকা কেজি দরেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয়। ফলে উদয়াস্ত শ্রম দিয়ে চাষ করেও তেমন ফল মেলে না। দ্বিগুণ দরে বিদেশে রপ্তানির সুযোগ মেলায় সুখের সাগরে ভাসছিলেন কালনার সুখসাগর পেঁয়াজ চাষিরা। সেই আশায় জল ঢেলেছে পেঁয়াজ রপ্তানিতে কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞার ফরমান।
রাজ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনে প্রথম স্থানে রয়েছে হুগলি জেলা। তার পরই রয়েছে পূর্ব বর্ধমান। জেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। তার সিংহভাগটাই হয় কালনায়। শীতকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন হয় গড়ে ৩ লক্ষ টন। কালনার পেঁয়াজের গুণমানের কারণে আবুধাবির কৃষিপণ্য সংস্থার নজরে আসে। মাস চারেক আগে সংস্থার লোকজন এসে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন। কিন্তু এই ফরমানে মন ভার কালনার পেঁয়াজ চাষীদের।