ভোটের জন্য রাজ্যের শাসকদল বাংলাদেশিদের রেশনকার্ড, ভোটার কার্ড করে দিচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ তুলেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এবার সেই বিজেপির এক নেতা, একই অভিযোগে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন। এক বাংলাদেশি মহিলাকে আধার কার্ড তৈরির জন্য ভুয়ো ঠিকানার প্রমাণপত্র জোগাড় করে দেওয়ার অভিযোগে এক বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ঘটনায় জড়িয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামও।
জানা গিয়েছে, রবি কুমার নামে বিজেপির ওই নেতাকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ধর্মা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তের প্রয়োজনে তাঁকে জলপাইগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামও জুড়ে রয়েছে। দু-বছর আগে দিলীপ ঘোষ যখন খড়গপুরের বিধায়ক ছিলেন, সেসময় তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশি ওই মহিলার জন্য রেসিডেন্স সার্টিফিকেট নিয়ে যান রবি।
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে জলপাইগুড়ি শহরের একটি পানশালায় রেইড করেছিল পুলিশ। বিশেষ সূত্রে ওই পানশালায় মানব পাচার-সহ বেআইনি কার্যকলাপ চলার খবর পেয়েছিল পুলিশ। তার ভিত্তিতেই পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। পানশালার মালিক ধরম পাসোয়ান, কর্মী সৌমেন বায়েন ও তাঁর স্ত্রী পুষ্পা রায়কে সেদিন গ্রেফতার করে। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে পুষ্পা রায় আসলে বাংলাদেশি। কিন্তু, সে ভারতে এসে নিজের নামে আধার কার্ড তৈরি করে ফেলেছে।
কী ভাবে তা সম্ভব হল? এর অনুসন্ধানে নেমে পুলিশ জানতে পারে পুষ্পার স্বামী সৌমেনের সঙ্গে মেদিনীপুরের বিজেপি নেতা রবি কুমারের যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশের ধারণা, ঠিকানার প্রমাণপত্রের সঙ্গে আধার কার্ডের জন্য আরও অনেক জাল ডকুমেন্টেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছিল ওই রবি।সে নিজেকে বিজেপির স্পোর্টস কনভেনর হিসেবে দাবি করেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ক্লাব সেলেরও তিনি কনভেনর। সেই সূত্রে দিলীপ ঘোষের সঙ্গেও সখ্য। তিনি খড়গপুরের বিধায়ক থাকাকালীন, তাঁর কাছ থেকেই বাংলাদেশি মহিলার জন্য বাড়ির প্রমাণপত্র লিখিয়ে নিয়ে যান। এই ঘটনায় জলপাইগুড়িতে মামলা শুরু হয়েছে।
ঘটনায় আতসকাচের তলায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভূমিকা। যে বিজেপি অনুপ্রবেশকারীদের হঠাতে বারবার এনআরসি-র হুমকি দিচ্ছে। সেই পদ্মশিবিরের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেই ভোটের লোভে অনুপ্রবেশকারীদের সাহায্য করার অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনার জেরেই বঙ্গ বিজেপির উপর চাপ বাড়ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।