দেশি গরুর দুধে সোনা থাকে। দাবি করে গোটা দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তাঁর দাবি যে ক্রমশ এভাবে বুমেরাং হয়ে যাবে তা হয়তো নিজেও কল্পনা করেননি মেদিনীপুরের সাংসদ। দিলীপের দাবির পর গোল্ড লোন পেতে স্থানীয় বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা মানাপ্পুরাম ফিনান্স লিমিটেডের অফিসে পৌঁছে যান এক ব্যক্তি। দাবি, তাকে গোল্ড লোক দিতে হবে!
ঋণদানকারী সংস্থার অফিসে গিয়ে তাঁর সাফ কথা, ‘গরু নিয়ে এসেছি। এর দুধে সোনা আছে। এটিকে জামিন রেখে লোন দিন’। শুনতে হাস্যকর হলেও ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার ডানকুনিতে। তাঁর যুক্তি, “দিলীপ ঘোষ বলেছেন গরুর দুধে সোনা থাকে। আমার ২০টি গাই রয়েছে। দুধ বেঁচেই আমার সংসার চলে। ভাবছি এদের বদলে গোল্ড লোন নিয়ে করবার আরও বাড়াব। ” স্বাভাবিকভাবেই, দিলীপবাবুর কথায় মোটেও আস্থা রাখতে পারেনি সংস্থাটি। গড়ালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ সিংয়ের দাবি, দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের পর থেকেই বিপাকে পড়েছেন তিনি। প্রায়ই গরু নিয়ে তাঁর কাছে আসছেন গ্রামের লোকজন। সবার মুখে একই প্রশ্ন, দুধে সোনা রয়েছে, এবার গরু বন্ধক রেখে কত লোন পাওয়া যাবে?
এহেন কাণ্ডের জন্য দিলীপের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন গরলগাছা পঞ্চায়েত প্রধান মনোজ সিং। তিনি বলছেন, দিলীপের এই দাবির পর সকলে এসে জানতে চাইছেন গরুদের বদলে কত টাকার লোন পাওয়া যাবে। ‘গরুর দুধে সোনা থাকে এই মন্তব্যের জন্য তো দিলীপ ঘোষকে নোবেল দেওয়া উচিত। প্রতিদিন নিজেদের গরু নিয়ে মানুষজন পঞ্চায়েতে এসে জানতে চাইছেন এগুলোর বদলে কত টাকা লোন পাওয়া যাবে। গরুগুলো প্রতিদিন ১৫-১৬ লিটার করে দুধ দেয়, তাই ওদের লোন দেওয়া উচিত বলে দাবি করছেন। এ এক অদ্ভুত সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদের উচিত রুটি, কাপরা, মকান নিয়ে আলোচনা করার। উন্নয়ন নিয়ে কথা বলার। কিন্তু বিজেপি শুধুই ধর্ম আর হিন্দুত্ব আর ধর্ম নিয়ে মেতে থাকছে। মানুষ কিন্তু ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন, তারা সিদ্ধান্তটাও সেভাবেই নেবেন।’