মৃত্যুর পর দেহ আগুনে পুড়িয়ে না দিয়ে দেহদান বা অঙ্গদানের মত মহৎ কাজে এখন এগিয়ে আসেন অনেক মানুষ। আর যে ব্যক্তি দেহ বা অঙ্গদান করছেন তাঁর মৃত্যুর পর দেহ বা অঙ্গ যত দ্রুত সম্ভব নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানো দরকার যে কাজে সহায়তা করে পুলিশ। একই দিনে রাস্তা ফাঁকা করে চারটি গ্রিন করিডর গড়ে এবার নজির গড়ল কলকাতা এবং বিধাননগর পুলিশ।
গতকাল দুপুরে অপ্রতিম ঘোষের হৃৎপিণ্ড, লিভার ও একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য পিয়ারলেস হাসপাতাল থেকে পৌঁছে দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। উল্লেখ্য গত ৩ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কলকাতা সন্তোষপুরের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী অপ্রতিম ঘোষ ভর্তি হন কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে।
গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার হাসপাতালের তরফ থেকে অপ্রতিম ঘোষকে ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণা করা হয়। তারপরই তাঁর পরিবার অঙ্গদানে সম্মতি দেন। অপ্রতিম নিজেও অঙ্গদানে ইচ্ছুক ছিলেন। প্রতিস্থাপনের জন্য বের করে নেওয়া হয় তাঁর হৃৎপিণ্ড, লিভার ও কিডনি। যথাসাধ্য দ্রুততায় অঙ্গগুলি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওই ৭ কিমি পথে তৈরি করা হয় গ্রিন করিডর। ১৪ মিনিটে কিডনি এবং ১৫ মিনিটে যথাক্রমে হৃৎপিণ্ড ও লিভার পৌঁছে দেওয়া হয়।
পুলিশের তৎপরতার ফলেই যথাসময়ে শুরু হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। অপ্রতিম ঘোষের হৃৎপিণ্ড, একটি কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপন করা হয় যথাক্রমে গণেশ চন্দ্র কুইলা, তারক ডোম ও স্বরূপ কুমার পালের শরীরে।
অন্যদিকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় বছর চল্লিশের অমিতা দাগা ভর্তি হয়েছিলেন ডিসান হাসপাতালে। তাঁর অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাঁকে মুম্বাইয়ের ন্যাশনাল বার্নস সেন্টারে ট্রান্সফার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার গ্রিন করিডরের মাধ্যমে তাঁকে ডিসান হাসপাতাল থেকে কলকাতা এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেওয়া হয় কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ ও বিধাননগর সিটি পুলিশের সমন্বয়ে।
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তত্ত্বাবধানে অমিতা দাগাকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স গতকাল দুপুর ১২.০৮ নাগাদ ডিসান হাসপাতালে থেকে রওনা দিয়ে ১২.১৮ নাগাদ উল্টোডাঙা নিউ ফ্লাইওভারে পৌঁছায়। এই ১০ কিমি পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট। সেখান থেকে কলকাতা এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেয় বিধাননগর সিটি পুলিশ।