ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রীত্ব ৫০-৫০ ভাগ হবে। এমনটাই দাবি ছিল শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের। ভোটে জেতার পর সেই নিয়েই কথা শুরু হয়েছিল। তারপর থেকেই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে জট অব্যাহত। সেই জট খুলল না আজও। আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদ চেয়ে এখনও অনড় উদ্ধব ঠাকরের দল। এক ধাপ সুর চড়িয়ে শিবসেনা আজ এ নিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের লিখিত আশ্বাস দাবি করেছে।
এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার আজও স্পষ্ট বলেছেন যে, সরকার গড়ার কোনও বিকল্প তাঁদের সামনে নেই। ভোটদাতাদের রায় মেনে বিরোধী আসনেই বসবে এনসিপি। কিন্তু বড় শরিক বিজেপির প্রতি শিবসেনার যে দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ রয়েছে, তা উস্কে দিতে আজ তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে কংগ্রেস ও এনসিপির একাংশ। এনসিপি নেতা ছগন ভুজবল কিংবা কংগ্রেস সাংসদ হুসেন দলওয়াই একই সুরে বলেছেন, শিবসেনা একা সরকার গড়তে চাইলে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
ভোটের ফল বেরোতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, শিবসেনার সমর্থন ছাড়া বিজেপির পক্ষে সরকার গড়া অসম্ভব। আর তা বুঝেই উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে সোজা মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি চেয়ে সরব হন উদ্ধব। পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণ মেনে সরকার গড়ার দাবি ওঠে। সূত্রের খবর, এ যাবৎ বিজেপি একচেটিয়া ছড়ি ঘুরিয়ে এসেছে শিবসেনার উপরে। তাই এ বার সুযোগ পেতেই বিজেপিকে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল নিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরেরা। তবে এখনও শিবসেনার দাবি মানার প্রশ্নে অমিত শাহেরা যেমন নীরব, তেমনই নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন উদ্ধবেরা।
এই পরিস্থিতিতে আজ উদ্ধবের বাড়ি মাতশ্রীতে বৈঠকে বসেন শিবসেনার জয়ী বিধায়কেরা। সেই বৈঠকেও উদ্ধব-পুত্র আদিত্যকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর জন্য ফের দাবি ওঠে। বৈঠক শেষে ঠাণের বিধায়ক প্রতাপ সরনায়েক বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে অমিত শাহ সমস্ত ভোটে পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণের কথা বলেছিলেন। সেই সূত্র মেনে উভয় দল আড়াই বছর সরকার চালানোর দায়িত্ব পাক। তা হলে শিবসেনার কোনও নেতাও মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন। ওই সমীকরণ মেনে চলার বিষয়ে শিবসেনাকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিক বিজেপি।’’ তা না-হলে প্রয়োজনে শিবসেনা অন্য পথ ভাবতে পারে বলে আজ প্রচ্ছন্ন হুমকিও বিজেপিকে দিয়ে রেখেছেন ওই বিধায়ক।
এই মুহূর্তে কংগ্রেস ও এনসিপির মোট বিধায়ক সংখ্যা ৯৮। শিবসেনার ৫৬। কংগ্রেস নেতা বিজয় ওয়াদেটিট্টিওরের কথায়, ‘‘শিবসেনাকে যদি কংগ্রেস ও এনসিপি সমর্থন দেয়, তা হলেই বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫৪-তে। সরকার গড়তে ম্যাজিক সংখ্যা হল ১৪৫। তাই শিবসেনা এখন ঠিক করুক তারা কী চায়— আড়াই বছরের আংশিক শাসন না পাঁচ বছরের পূর্ণ শাসন।’’ যদিও এনসিপির আরেক শীর্ষ নেতা প্রফুল্ল পটেল বলেন, ‘‘এনসিপি কোনও সরকার গঠনের অংশীদার হতে অনিচ্ছুক। বরং বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে আমরা প্রস্তুত।’’ আর ঠিক এই কথাটিই বলেছেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।