নির্বাচনী পরিচয় পত্র ছিল, ভোটার তালিকায় নামও ছিল তা সত্বেও যেতে হয় আসামের গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে। সেখানেই মারা গেলেন বন্দি ফালু দাস (৭০)। ‘বিদেশি’ ফালু–র দেহ নিতে অস্বীকার করেছে তাঁর পরিবার। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত বৃদ্ধের তিন সন্তানই জানিয়েছেন, তাঁর বাবাকে যখন ‘বাংলাদেশি’ বলা হচ্ছে, তখন সেদেশের সরকারকেই দেহ দেওয়া হোক। তাঁরা দেহ নেবেন না।
আসামে বিজেপি–র আমলে বন্দিশালায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আসাম রাজ্য নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতি–র মহাসচিব সাধন পুরকায়স্থ বলেন, “মোদীর আমলে অত্যন্ত অমানবিক পরিবেশে বাঙালিদের বিদেশি বানিয়ে হত্যা করা হচ্ছে আসামে। দুলাল পালের পর ফালু”।
আসামের নলবাড়ি জেলার মুকালমুয়া থানার সোতেমারির বাসিন্দা ফালু দাস। ৭০ বছরের বৃদ্ধ ভারতীয় নাগরিক। নির্বাচন কমিশনের সচিত্র পরিচয় পত্র রয়েছে তাঁর। কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁর নাগরিকত্ব মেনে নিতে অস্বীকার করে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে তাঁকে ‘বিদেশি’ বলে ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এর আগে, তেজপুর ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি দুলাল পাল ১৩ অক্টোবর অসুস্থ অবস্থায় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেলে তাঁর পরিবারও দেহ নিতে অস্বীকার করে। দুলালবাবুর ডেথ সার্টিফিকেটে ঠিকানা ‘ঢাকা’ লেখা হয়েছিল। পরে দুলালবাবুর ছেলেরা দেহ নিতে অস্বীকার করলে ডেথ সার্টিফিকেট বদলে আসামের ঠিকানা লেখা হয়।
সরকারি সূত্রে খবর, গোয়ালপাড়া বন্দিশালায় বন্দি ফালুকে ১১ অক্টোবর অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর অবস্থার অবনতি হওয়ায় পাঠানো হয় গুয়াহাটি। সেখানেই মৃত্যু হয়। ফালু দাসের ছেলেদের অভিযোগ, অসুস্থতার খবরটুকুও তাঁদের জানানো হয়নি। মারা যাওয়ার পর খবর দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি যেহেতু ‘বাংলাদেশি’ তাই দেহ নিতে অস্বীকার করেন ফালুর ছেলেরা।