রেলের বেসরকারিকরণ প্রায় সম্পূর্ণ। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিক্রি করে দিতে চলেছে মোদী সরকার। এবার কি কোপ পড়ছে ব্যাঙ্কের ওপর? এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের পাসবইয়ে কর্তৃপক্ষের স্ট্যাম্প ঘিরে এমনই শোরগোল উঠল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক যদি উঠে যায়, তবে ১ লক্ষ টাকার বেশি দায়িত্ব কর্তৃপক্ষ নেবে না। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কষ্টের সঞ্চয়ের টাকাও আর সুরক্ষিত থাকল না।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ওই পাসবইয়ের ছবি। যেখানে এইচডিএফসি-র কর্তৃপক্ষের তরফে স্ট্যাম্প মেরে প্রকারন্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যত টাকাই থাক, ব্যাঙ্ক উঠে গেলে গ্রাহকদের ১ লক্ষ টাকার বেশি দায়িত্ব কর্তৃপক্ষ নেবে না। এরপরেই আতঙ্কিত গ্রাহকেরা ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকের প্রশ্ন, হঠাৎ এমন স্ট্যাম্প মারা হচ্ছে কেন? তবে কি ব্যাঙ্ক উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
কোন আইনে ব্যাঙ্ক উঠে গেলে আপনার জমানোর টাকা থেকে মাত্র ১ লক্ষ টাকাই আপনি ফেরত পাবেন? সেটা হল, এফআরডিআই বিলের ডিআইসিজিসি আইন। এই আইন অনুযায়ী ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হলে একজন আমানতকারী সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা ফেরত পাবেন৷ যখন প্রথম এই আইনটি ১৯৬১ সালে বলবত্ হয়, তখন ক্ষতিপূরণের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১৫০০ টাকা৷ পরে বিভিন্ন সময়ে এটি বাড়ানো হয়, শেষবার ১৯৯৩ সালের মে মাসে৷ যদি মোদী সরকার আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে সত্যই আন্তরিক হয়, তা হলে প্রথমে এই ঊর্ধ্বসীমাটি বাড়ানো উচিত, যা গত সিকি শতক ধরে একই থেকে গিয়েছে৷ অথচ, এফআরডিআই বিল এই বিষয়ে নীরব৷
এই মুহূর্তে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি অনাদায়ী ঋণভারে জর্জরিত। আর সেই সময়েই সামনে ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের ওপর কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণা-স্ট্যাম্প। স্বাভাবিক ভাবেই কোটি কোটি আমানত কারীদের বুকে কাপুনি ধররে গেছে। অতএব সাধু সাবধান। সময় পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে ফেলুন বিনিয়োগ-পরিকল্পনাও।