গত চার বছরে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ৮ কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। আরটিআই তথ্যে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, ২০১৫ থেকে ২০১৮-র মধ্যে অন্তত ১২০২১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনায় বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র সরকারের অপদার্থতার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। নির্বাচনের মুখে এমন তথ্যে বেকায়দায় গেরুয়া শিবির।
২১ অক্টোবর মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। জোর প্রচার চালাচ্ছে শাসক ও বিরোধীরা। মহারাষ্ট্রের শাসক দল বিজেপি ও শিবসেনার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এখানেই শেষ নয়, বিজেপি আগামী নির্বাচনে জয়লাভের আশায় একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নির্বাচনী ইস্তাহারে বলা হয়েছে, বীর সাভারকারকে ভারতরত্ন দেওয়া হবে। যা নিয়ে বিরোধীরা সরব। এরই মাঝে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। কৃষিনির্ভর রাজ্যে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা দিনদিন বাড়ছে। আরটিআই (তথ্যের অধিকার আইন) এর হিসেব অনুযায়ী গত চার বছরে প্রতিদিন গড়ে আটজন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন মহারাষ্ট্রে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে মহারাষ্ট্রে আত্মহত্যা করেছেন ৩২৬৩ জন কৃষক। ২০১৬ সালে সংখ্যাটা ৩০৮০। ২০১৭ সালে আত্মহত্যা করেছেন ২৯১৭ জন কৃষক। ২০১৭ সালে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ২৭৬১। চলতি বছরে ইতিমধ্যেই আত্মহত্যা করেছেন ৩৯৬ জন কৃষক। হিসেব বলছে, চলতি বছরের প্রথম দু’মাসে গড়ে প্রতিদিন ৬ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। এও জানা গেছে, অমরাবতীতে সবচেয়ে বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। সংখ্যাটা ১৪৪। ঔরঙ্গাবাদে আত্মহত্যা করেছেন ১২৯ জন কৃষক। নাসিকে আত্মঘাতী হয়েছেন ৮৩ জন। নাগপুরে ২৫ জন। আর পুনেতে আত্মঘাতীর সংখ্যা ১৫। বলা হয়েছে, দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। ফসল ফলানোর জন্য দিনরাত ক্ষেতে পরিশ্রম করেন কৃষকেরা। কিন্তু অভাবের জন্যই তাঁরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
মহারাষ্ট্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ আবার কৃষক আত্মহত্যার গোটা দায় চাপিয়েছেন এনসিপি সভাপতি শরদ পাওয়ারের উপর। তিনি বলেছেন, ‘১৫ বছর মহারাষ্ট্রে ক্ষমতায় ছিলেন শরদ পাওয়ার। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু কৃষকদের জন্য কিছুই করেননি।’ মনমোহন সিং বিজেপিকে খোঁচা মেরে বলেছেন, ‘মহারাষ্ট্র আগে বিনিয়োগে প্রথম ছিল। এখন কৃষক আত্মহত্যায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে।’