মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর দিনই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে এবার রেলের বেসরকারিকরণ করতে চলেছে মোদী সরকার। তারপরই সমস্ত জল্পনাকে সত্যি করে বাজেট পেশের দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, রেল এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের পথেই হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র। আর সম্প্রতি নীতি আয়োগের বৈঠকের পর ১৫০ টি ট্রেন ও ৫০টি স্টেশনের ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসছে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া। জানা হেছে, বিভিন্ন ট্রেনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হাতে। যেমন, বেসরকারি বিমান পরিবহণ সংস্থা ইন্ডিগো পেতে চলেছে রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রী পরিষেবার ভার।
শুধু তাই নয়। সূত্রের খবর, রেলের বিলাসবহুল অন্যান্য ট্রেনের ভার ইন্ডিগো ছাড়াও স্পাইস জেট-সহ একাধিক বেসরকারি সংস্থার হাতে যাবে। আবার এ-ও শোনা যাচ্ছে, রাজধানী বা দুরন্তের মতো বিলাসবহুল দূরপাল্লার ট্রেনে খুব শিগগিরই দেখা মিলতে পারে ‘এয়ার হোস্টেস’দের আদলে ‘ট্রেন হোস্টেস’দেরও। যাত্রী আপ্যায়ন থেকে স্বাচ্ছন্দ্য দেখাই হবে তাঁদের কাজ। বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলির যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকায় ওই সংস্থাগুলিই অগ্রাধিকার পেতে পারে বলে রেলকর্তাদের অনুমান। আর এই দৌড়ে ইন্ডিগো সব থেকে এগিয়ে আছে বলে রেলসূত্রের খবর। রেলকর্তাদের পাশাপাশি ইন্ডিগোও যাত্রী পরিষেবার বরাত পাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, লাভ করাই এখন রেলের মূল লক্ষ্য। পণ্য পরিবহণের লাভ কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে ভাড়ার হার ঠিক করাই ছিল পূর্বতন সরকারগুলির মূল লক্ষ্য। কিন্তু মোদি জমানায় রেলের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার লাভ দেখাটাও রেলের ‘বড় দায়িত্ব’ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন রেলেরই অনেকে। তাই ১৯৬৯ সালের ৩ মার্চ তৎকালীন রেলমন্ত্রী রাম সুভাগের পরিকল্পিত ভারতীয় রেলের সবচেয়ে ‘গর্বের ধন’ রাজধানী এক্সপ্রেস,১৯৮৮ সালে মাধবরাও সিন্ধিয়ার হাত ধরে চালু হওয়া শতাব্দী এক্সপ্রেস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বপ্নের দুরন্ত এক্সপ্রেস, লালুপ্রসাদ যাদবের হাত ধরে চালু হওয়া গরিব রথ। একে একে চলে যাবে বেসরকারি হাতে।