মোদী জমানায় দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে দফায় দফায় উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন তিনি। নোবেল জয়ের পরও মুখ খুলে অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সরকারের। এবার গভীর সঙ্কটের মুখে পড়া ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে বাঁচাতে এখনই সমস্যার দিকে নজর দিতে হবে বলে সতর্ক করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্কটের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নজরদারির অভাবের দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি। তাঁর পরামর্শ, এই পরিস্থিতিতে রুগ্ন ব্যাঙ্কগুলি বিক্রি করে সেই টাকায় অন্য ব্যাঙ্কগুলিকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করুক সরকার।
বুধবার একটি সংবাদমাধ্যমকে ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বর্তমানে কঠিন সমস্যার মুখে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা। একাধিক ব্যাঙ্ক আর্থিক সঙ্কটের মুখে। যত বেশি গভীরে যাওয়া যাবে, তত বেশি সমস্যা সামনে আসবে। দেখা যাচ্ছে প্রতিদিনই নতুন কোনও ব্যাঙ্কে সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। কাল পর্যন্ত ঠিক ছিল যে পাঞ্জাব ও মহারাষ্ট্র সমবায় ব্যাঙ্ক, হঠাৎই সেই ব্যাঙ্ক সঙ্কটের জেরে ধরাশায়ী। এই সঙ্কটের মধ্যে একটা ছকও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মনে হয়, বহু বছর ধরে বিশৃঙ্খলা চলতে দেওয়া হয়েছে। সমস্যাটা এখন রীতিমতো গভীরে।’
তাঁর কথায়, ‘অবস্থা সামলাতে যত টাকার দরকার সরকারের কাছে তত টাকা নেই। যথাযথ হবে রুগ্ন ব্যাঙ্কগুলিকে বিক্রি করে তা থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে অন্য ব্যাঙ্কগুলিকে বাঁচানো দরকার। অন্তত রুগণ ব্যাঙ্কগুলির অনেক শাখা আছে, ভাল কিছু কর্মী রয়েছেন। তাই সেগুলোর বাজারও আছে। আরও নতুন সমস্যা দেখা দেওয়ার আগেই এগুলো বিক্রির ব্যবস্থা করা দরকার। সরকারের একাজ করার মতো যোগ্যতা নেই। অন্য কাউকে এর দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।’
সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইনে জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অনাদায়ী ঋণ হিসাবে মুছে ফেলেছে ৭৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এই টাকা ঋণ হিসেবে নিয়ে ফেরত দেননি ২২০ জন। এদের প্রত্যেকের ঋণের পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি টাকার ওপর। অভিজিৎ বাবুর মতে, এটা হিমবাহের চূড়া মাত্র। এই পরিস্থিতি মানুষের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করবে। তার জন্য ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের দায়ী করা যায় না। কেউ এবিষয়ে মুখ খুলছেন না। এমনকি রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সব ব্যাঙ্ককে সতর্ক করছে না। তারপর হঠাৎ করে লোকে দেখছে ব্যাঙ্ক সঙ্কটে।