যেন মগের মুলুক! সদ্য মৃত মানুষটিকে নিয়েও চলছে রাজনীতি! এ নিয়ে এবার ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জিয়াগঞ্জের মৃত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের পরিবার ও এলাকাবাসী। বিজেপি যেভাবে
বন্ধুপ্রকাশকে নিজেদের কর্মী বলেছে, তাতে বিজেপির ওপর চরম ক্ষুব্ধ তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, মৃত্যু নিয়ে বিজেপি অহেতুক রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস- প্রতিটি রাজনৈতিক দলই যখন এ নিয়ে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করছে, তখন মৃতের গ্রামের বাড়ি, শ্বশুরবাড়ির সব আত্মীয়স্বজনরাও সকলে একই কথাই বলছেন, ‘মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে বিজেপি যে এমন নোংরা রাজনীতি করতে পারে, তা ভাবতে পারছি না।’
বন্ধুপ্রকাশের মাসতুতো ভাই রাজেশ ঘোষ বলেন, ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আমার দাদা কোনওদিন কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। কখন মিটিং-মিছিলে যাননি। আরএসএস করার প্রশ্নই নেই। মর্মান্তিকভাবে একই বাড়ির তিনজন খুন হলেন, আর বিজেপি তার ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। বিজেপি নেতাদের বলব, দোহাই, এমন মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করবেন না। আমরা চাই, পুলিশ খুনিদের গ্রেফতার করুক।’ বন্ধুপ্রকাশের শ্যালক সাক্ষিগোপাল মণ্ডলেরও দাবি, ‘আমার জামাইবাবু, দিদি কেউ কোনওদিন রাজনীতি করেনি। বিজেপি নেতারা কেন যে এমন করছেন বুঝতে পারছি না। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।’
নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অশোক দাস বলেন, ‘একটি পরিবারের সকলকে নৃশংসভাবে খুন করা হল। আমরাও চাই অবিলম্বে পুলিশ খুনিদের ধরুক। আমরা মৃতের বাড়ির পাশে আছি। কিন্তু বিজেপি যা করছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’ যে এলাকায় মৃত শিক্ষকের বাড়ি, সেই এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধুপ্রকাশ এখানে ছিলেন। কোনওদিন কোন দলের মিটিং-মিছিলে তাঁকে দেখা যায়নি। পুজোর আগেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জিয়াগঞ্জে এসেছিলেন। তখনও কেউ বন্ধুপ্রকাশকে বিজেপির সভায় দেখেননি। আর জেলার এসপি মুকেশ কুমারব সাফ জানিয়েছেন, ‘মৃত শিক্ষক রাজনীতি করতেন না। রাজনৈতিক করণে খুনও হননি। কী কারণে খুন, আমরা তা খতিয়ে দেখছি।’