মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ বিজয়া দশমীর উচ্ছ্বাসের মধ্যেই জিয়াগঞ্জ শহরে লেবুবাগানে বাড়ির ভেতর থেকে ঢুকে খুন করা হয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বিউটি মণ্ডল পাল ও তাঁদের ৬ বছরের ছেলে বন্ধুঅঙ্গন পালকে। বাড়ির শোওয়ার ঘরের খাটের উপর দেহ মেলে প্রকাশবাবুর। মেঝেতে পড়েছিল তাঁর ছেলের রক্তাক্ত দেহ। পাশের ঘর থেকে মেলে বন্ধুপ্রকাশবাবুর স্ত্রী বিউটির ক্ষতবিক্ষত দেহ।এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে গোটা রাজ্যজুড়ে।এই নৃশংস হত্যা কাণ্ডে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
খুনে জড়িত থাকার সন্দেহে ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। উঠে এসেছে নতুন নতুন তথ্য। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই খুনের পিছনে আর্থিক লেনদেন রয়েছে। এছাড়া খুনী ওই পরিবারের পরিচিত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে সম্পত্তির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বাবার সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল বন্ধুপ্রকাশ পালের। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতর বন্ধু সৌভিক বনিকের সঙ্গেই আটক করা হয়েছে বন্ধুপ্রকাশের বাবাকে অমর পালকেও। ঘটনায় ঋণ তত্বের পাশাপাশিই উঠে এসেছে পারিবারিক কলহ।
জোরালো হয়েছে ঋণ তত্বও। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের অনুমান, সৌভিক বনিকের পাওনা মেটাতে না পারার কারণেই আক্রোশের বলি হয়েছেন শিক্ষক। ঘটনায় আটক করা হয়েছে আর্থিক সংস্থার কর্মী সন্দেহভাজনকে। চলছে ম্যারাথন জেরা। পুলিসকে তদন্তে সাহায্য করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সিআইডি।
বাবা-ছেলের সম্পর্ক ভাল ছিল না বলেই দাবি করেছেন শিক্ষকের মায়ের। সূত্রের খবর, অমর পালের দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই বন্ধুপ্রকাশ ও তাঁর বাবার সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। তৈরি হয় আক্রোশ। যদিও বাবার সঙ্গে থাকতে না বন্ধু প্রকাশ। পাশাপাশি সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলাতেও মৃত শিক্ষক জড়িয়েছিলেন বলেই বলেই খবর।
শুক্রবার জিয়াগঞ্জের হত্যাকাণ্ডের তদন্তসূত্রে বীরভূমের রামপুরহাটে যায় মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের একটি দল। সেখানকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শৌভিক বণিক নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে যান লালবাগ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বরুণ বৈদ্যের নেতৃত্বে তদন্তকারী পুলিশের দল। পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তদন্তে একটা বিষয় পরিষ্কার, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই খুন বলে এখনও পর্যন্ত অনুমান পুলিশের। সিআইডি-কেও তদন্তে যুক্ত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।