পুজোর মানেই বাঙালিদের কাছে অন্য আমেজ। কর্মব্যস্ত মানুষেরা ছুটির আনন্দে গা ভাসায় এসময়। আর সেই কয়েকদিনের ছুটি হাতছানি দেয় কলকাতার বাইরে কোথাও গিয়ে উপভোগ করতে। আর সেখানেই চিন্তা মুক্ত হতে লাইন দেন বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির দরজায়। আর এইসব এজেন্সিগুলোও তাদের নানাবিধ প্যাকেজের ঢালি নিয়ে উপস্থিত হয় ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির কাছে। সেই রকমই নানা জায়গায় ভ্রমণের লোভ দেখিয়ে, চল্লিশ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল ভ্রমণ সংস্থা কক্স অ্যান্ড কিংস-এর বিরুদ্ধে।
রাসেল স্ট্রিটের ওই ভ্রমণ সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি বছরের মতোই পুজোর ছুটিতে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বিজ্ঞাপন দেয় ওই সংস্থা। তালিকায় ছিল ইউরোপ, আমেরিকা থেকে শুরু করে মিশর, চিন, ব্যাংকক। দেশের মধ্যে আন্দামান বা গোয়ার মতো বিভিন্ন জায়গাও তালিকায় ছিল তাদের।
স্বাভাবিক ভাবেই নাম লেখান বহু ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি। সম্প্রতি, এ শহরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে থমাস কুক। ফলে রাসেল স্ট্রিটের নামকরা এই সংস্থা কক্স অ্যান্ড কিংস-এ ভিড় তাই অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশিই ছিল। আগাম বুকিং করতে আসা কাস্টমারদের বলা হয়, যাতায়াত, খাওয়াদাওয়া, থাকার পুরো ব্যবস্থাই করা হবে সংস্থার তরফে। কিন্তু তার বদলে পুরো টাকাটাই আগাম দিতে হবে।
সেই মতোই টাকা জমা দেন বহু মানুষ। কিন্তু মুশকিল হয় তার পরে। বেড়াতে যাওয়ার দিন ক্রমে এগিয়ে এলেও না মেলে টিকিট, না মেলে কোনও বুকিংয়ের কাগজ। অনেকেই যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন সংস্থার সঙ্গে, কিন্তু সন্তোষজনক উত্তর মেলে না। বলা হয়, সব প্রস্তুতি হচ্ছে, চিন্তা না করতে। কোনও অসুবিধা হবে না। এক সময়ে ফোন ধরা বন্ধ করে দেয় ওই সংস্থা। এর পরে অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিস বন্ধ। ওই সংস্থা গত তিন মাস ধরে দু’হাজার কর্মীকে বেতনও দিতে পারেনি।
দেখা যায়, একই কারণে ওই সংস্থার অফিসে ভিড়ে করেছে বহু মানুষ। পুলিশ জানিয়েছে, কম করে ৭৫ জনের কাছ থেকে ৭.৫ কোটি টাকা প্রতারণা করে পালিয়েছেন সংস্থার কর্মকর্তারা। প্রতারণায় অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাদের উদ্দেশে খোঁজ চলছে।